আমি হতবাক, বাকরুদ্ধ, স্তব্ধ

Spread the love

আমি হতবাক, আমি বাকরুদ্ধ, আমি স্তব্ধ।

“বাবা” চার সন্তান জন্ম দিয়ে ছিলো, কোটি পরিশ্রম কঠিন কষ্টের মধ্যে দিয়েও নিজে না খেয়েও সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিয়েছিল। সন্তানদের বড় করে তুলে ছিলো। ৪ সন্তান রেখে অল্প বয়সেই স্ত্রী মারা গেছে। সন্তাদের মুখে দিগে তাকিয়ে ২য় বিয়ে সংসার করা হয়নি। ২য় স্ত্রী যদি সন্তানদের ভালো না বাসে! স্ত্রী যদি সন্তানদের নির্যাতন করে সেই ভয়!
একাই বাবা চার সন্তান মানুষ করেছে। প্রতিষ্ঠিত করেছে জীবনে চলার জন্য। বড় আশা ছিলো জীবনে শেষ সময়ে সন্তানেরা পাশে থাকবে। কিন্তু তা আর হলো না। বয়সের ভারে শরীর অসুস্থ হয়ে পরেছিলো। শরীর ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিল শরীরের ভার বহন করা যাচ্ছিল না। মাথায় ভুলে যাওয়া রোগ তৈরি হয়েছিল। মনের অজান্তেই মাঝে মাঝে একটু আধটু পাগলামি করা হয়ে যেতো।
তাতেই পরিবার চার সন্তান পুত্রে বৌ নাতি নাতনিদের কাছে বোঝা হয়ে গিয়েছিল। তারা তাকে অসহ্য মনে করে, তাইতো রাতের অন্ধকারে রাস্তার বসিয়ে রেগে গেছে সন্তানেরা।
সেই রাস্তা থেকে দীর্ঘ ৮/৯ মাস পূর্বে আশ্রয় হয়েছে চাইল্ড এন্ড ওল্ড এইজ কেয়ারের। ৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধ পিতা বুঝতে পেরেছিল তার পাশে তার আপনজন বলতে কেউ নাই। বর্তমানে যারা তার আশেপাশে আছে তাদের সাথে রক্তের কোনো সম্পর্ক তার নেই। আবছা চোখে শুধুই সন্তান স্বজন নাতি নাতনী খুঁজে চলছিলো। সন্তান নাতি নাতনীর জন্য বুকটা হাহাকার করে যাচ্ছিলো।
বার বার বৃদ্ধাশ্রম থেকে অসুস্থতার কথা ফোন করে জানানো হয় পরিবার সন্তান নাতি নাতনিদের কাছে। একবার দেখতে আশার জন্য অনুরোধ করা হয়। মানুষ কি বলবে? লোকজন বিষয় জানলে কি হবে? মান-সম্মান সব চলে যাওয়ার ভয়ে বৃদ্ধ বাবাকে দেখতে আসেনি সন্তান স্বজন নাতি নাতনি।
তবে বাবা পরিবার সন্তান স্বজন নাতি নাতনিদের ছাড়া একা কখনো কোনো দিন কোথায় থাকেনি। এখন কি করে থাকবে? তাই তো বৃদ্ধাশ্রমেও বেশি দিন থাকা হলো না। হাজারও কষ্ট বুকে চাপা দিয়ে জীবন থেকে তাকে বিদায় নিতে হলো।
হয়তোবা বাবা, সন্তান স্বজন নাতি নাতনিদের জন্য মনে মনে আল্লাহ কাছে দোয়া করেছিলো। আল্লাহ ওদের আপনি ভালো সুখ শান্তিতে রাখেন। বলেছিলো তোদের আর কোনো জ্বালাতন করবো না।
আজ বৃদ্ধ বাবা পৃথিবী পরিবার সন্তান স্বজন নাতি নাতনিদের সকলের কাছ থেকে চির বিদায় (মারা গেছে) নিয়েছে। ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’।
পরিবার সন্তান স্বজন নাতি নাতনিদের কাছে জানানো হয়েছে আপনার প্রিয়জন আর নেই। তার মৃতু হয়েছে।
এখনো সমস্যা, কে এই বৃদ্ধা বাবার মৃত দেহটার দায়িত্ব নিবে? কে শেষ সৎকার দাফন কাফন করবে। সিদ্ধান্ত নিতে পারছেনা কেউই…..
চার সন্তান একে অপরকে দায়িত্ব নেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। একে অপরের উপর দোষারোপ করছে। জীবনের শেষ বিদায় বেলার দায়িত্ব নেওয়ার ও কেউ তো থাকবে?
আসলে পৃথিবীটা বড়ই নিষ্ঠুর
কার্টেসী: Milton Samadder
চাইল্ড এন্ড ওল্ড এইজ কেয়ার পরিচালক



আমাদের ফেসবুক পাতা




প্রয়োজনে কল করুন 01740665545

আমাদের ফেসবুক দলে যোগ দিন







Translate »