মানবিক সংস্থার অমানবিক কাজ
ছুটি চেয়েছিলাম; বলেছিলাম স্যার, আমার স্ত্রী আড়াই মাসের অন্তঃসত্ত্বা
জুন ২২ ২০২০, ১০:৪১
ঝলক নিউজ : ২২ জুন ২০২০
মানবিক সংস্থার অমানবিক কাজ
ছুটি চেয়েছিলাম; বলেছিলাম স্যার, আমার স্ত্রী আড়াই মাসের অন্তঃসত্ত্বা
‘আমার ভালোবাসা আমাকে ছেড়ে পৃথিবী থেকে চির বিদায় নিয়ে গেল, শুধু একজন পাষাণ এরিয়া ম্যানজারের জন্য। দুদিন আগে ছুটি চেয়েছিলাম। বলেছিলাম স্যার, আমার স্ত্রী অসুস্থ, আড়াই মাসের অন্তঃসত্ত্বা, বেশি বমি করে, বাসায় দেখাশোনা করার মতো মানুষ নেই, আমাকে ছাড়া একা থাকতে পারবে না। কিন্তু আমার কথা তোয়াক্কা করে নাই।‘
নবরতন চাকমা। খাগড়াছড়ির রামগড়ের বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র’র মাঠকর্মী। অফিস থেকে ছুটি না পাওয়ায় তার আড়াই মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে বাঁচাতে পারেননি তিনি। অসুস্থ অবস্থায় মারা গেছেন নবরতন চাকমার স্ত্রী বিপাশী চাকমা। এ ঘটনায় ওই সংস্থার মানিকছড়ির এরিয়া ম্যানেজার ইকবাল বিন তৈয়বকে দায়ী করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন নবরতন চাকমা।
নবরতন চাকমা তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমার ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের মাধ্যমে সুপারিশ নেয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু আমার ব্রাঞ্চ ম্যানেজারকেও গালাগাল দিয়ে সুপারিশ বাতিল করে। দুদিন বমি করতে করতে দুর্বল হলে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। আমার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার এরিয়া ম্যানেজারকে ফোনে বলে স্যার উনার স্ত্রী মরা মরা অবস্থা, ছুটি দিয়ে দেন। এরিয়া ম্যানেজার আমার ম্যানেজারকে গালি দিয়ে বলে মানুষ কি এতো সহজে মরে নাকি?? তারপর এরিয়া ম্যানেজার আমাকে ছুটি দেয়, হসপিটালের কাছে এসে আমার সহকর্মীদের বলি আমার স্ত্রীর কি হয়েছে ?? আমার সঙ্গে কেউ কথা বলছে না। হসপিটালের সিটে গিয়ে দেখি আমার ভালোবাসা আমার সাথে কথা না বলে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেছে।’
এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। এমন অমানবিক কর্মকাণ্ডের জন্য এরিয়া ম্যানেজারকে দুষছেন সবাই। করোনাকালেও এমন অমানবিক কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অনেকেই।