সরকারী বরিশাল কলেজের নাম পরিবর্তনে পক্ষ-বিপক্ষ-রাজনীতি

Spread the love

আজকের ঝলক নিউজ :

সরকারী বরিশাল

গত সপ্তাহে  অশ্বিনী কুমার টাউন হল চত্বরে সরকারি বরিশাল কলেজকে “মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত নামে নামকরণ বাস্তবায়ন কমিটি এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। কমিটির আহ্বায়ক মানবেন্দ্র বটব্যাল এ দাবির সাথে জনসাধারণকে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।

অপরদিকে সরকারি বরিশাল কলেজের নাম অপরিবর্তিত রাখার দাবিতে কলেজের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেন। টাউন হলের সামনে সদর রোডে গণস্বাক্ষর গ্রহণ করা হয় যা এখনো চলমান আছে।

ভিডিও ধারণ : প্রতিনিধি আজকের ঝলক: ২০ জুলাই ২০২০
গত ২৯ জুন শিক্ষামন্ত্রণালয় সরকারি বরিশাল কলেজের নাম পরিবর্তন করে ‘মহাত্মা অশ্বিনী কুমার সরকারি কলেজ বরিশাল’ নামকরণের যৌক্তিকতা উল্লেখপূর্বক সুপারিশসহ মতামত প্রেরণের জন্য শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান বরাবরে চিঠি প্রেরণ করে। এরপরই পক্ষে-বিপক্ষে আন্দোলন শুরু হয়েছে। নগরীর কালীবাড়ি রোডে বিএম স্কুলের একটি ভবনে ১৯৬৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু হয় বরিশাল নাইট কলেজের। ১৯৬৬ সালে একই রোডে অশ্বিনী কুমার দত্তের বাসভবনে ওই কলেজটি স্থানান্তরিত হয়। ১৯৭০ সালে দিবা শাখা শুরু হয়।

১৯৮৬ সালে কলেজটি জাতীয়করণ হয় তখন বরিশাল নাইট কলেজের পরিবর্তে সরকারি বরিশাল কলেজ নামকরণ করা হয়। আর বন্ধ হয় নৈশ শাখা। অশ্বিনী কুমারের বাড়িতে এই কলেজ চালু করায় বরিশালের একটি পক্ষ অশ্বিনী কুমারের নামে কলেজের নাম করার দাবি করে আসছে।

এই পৃথিবীতে মাত্র দু’জন মানুষ তাদের চিন্তা এবং কর্মের গুনে “মহাত্মা” উপাধি পেয়েছেন। একজন ভারতের জাতির পিতা, সর্বজন শ্রদ্ধেয় মহাত্মা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী এবং একজন আমাদের বরিশালের মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত। সমগ্র দক্ষিনাঞ্চলে উচ্চ শিক্ষা বিস্তার এবং রাজনৈতিক দীক্ষাদানে মহাত্মা অশ্বিনী কুমার কি কি করেছেন সেগুলো নতুন করে বলা বাহুল্য। মহাত্মা মানে মহৎ যার আত্মা। যার নামে ইচ্ছা তার নামে হউক, নোংরা রাজনীতির সুতিকাগা বর্তমান বরিশাল কলেজের নাম মহাত্মা অশ্বিনীকুমারের নামে না করলেই বোধ হয় ভালো হয়।
ফেসবুকে এ নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা ফেসবুক গ্রুপে বরিশাল বিভাগের তথ্য কনিকায় শেয়ার করে এভাবে এক সদস্য : হুবহু তার লেখা তুলে ধরা হলো
বরিশালে একটি সম্ভাবনার মৃত্যু আসাদুজ্জামান ॥ বরিশাল কলেজের নামকরণ নিয়ে কট্টরপন্থি গোত্র প্রীতির কারণে উদীয়মান সার্বজনিন নারী নেত্রীর সম্ভাবনার মৃত্যু ঘটেছে। এই সম্ভাবনার নারী নেত্রীর নাম ডাঃ মনীষা চক্রবর্তী। মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের নামে, সরকারি বরিশাল কলেজের নাম করণের জন্য চুপিসারে সুশীল সমাজের ব্যানারে কয়েক ব্যক্তির দাবীর প্রেক্ষিতে বরিশাল কলেজের নতুন নাম করার প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছিল। সেই অনুযায়ী তদন্ত ও শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছিল। ঘটনাটি জানাজানি হলে ইতিহাস ঐতিহ্য’র বরিশালে, কলেজের সাবেক ও বর্তমান ছাত্ররা নাম অপরিবর্তিত রাখার পক্ষে আন্দোলনে নামে। সেই আন্দোলন মোকাবেলা করতে সুশীল সমাজের ব্যানারে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয় কতিপয় জনবিচ্ছিন্ন সুশীল ব্যক্তিরা। তাদের পক্ষে কোন জনসমার্থন না পেয়ে ৯০ ভাগ মানুষের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে টাউন হলের সামনে মানববন্ধনে বাসদ নেত্রী ডাঃ মনীষা চক্রবর্তীর কয়েকজন বাসদ নেতাকর্মী ও রিক্সা, ভ্যান, অটো চালকদের সাথে কোমলমতি শিশুদের যুক্ত করা হয়। এর পূর্বে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করার ঘোষনা দেওয়া হয়। অশ্বিনী কুমার দত্তের নামে নামকরনের সমর্থনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে গিয়ে দেখা যায়, ১০১ জনের মধ্যে বরিশালে কট্টর হিন্দুত্ববাদী এন্ট্রি আওয়ামী সেন্টিমেন্টের স্বগোত্রীয় ৪/৫জন ব্যক্তির সাথে আরও ২জন সুশীল সমাজের ব্যানারে দাড়িয়েছেন।

ডাঃ মনীষা চক্রবর্তী তার রিক্সা, ভ্যান, শ্রমিক ও শিশুদের নিয়ে আন্দোলন জোরদার করার চেষ্টা করছেন। এদিকে বরিশাল কলেজের সাবেক ও বর্তমান ছাত্রদের সাথে আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে বরিশালের সব শ্রেণী ও পেশার মানুষ। গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে হাজার হাজার মানুষ স্বাক্ষর করছেন। এ নিয়ে বরিশালে বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দু চলছে। সিটি নির্বাচনের পরে ডাঃ মনীষা চক্রবর্তীকে সার্বজনিন লোক হিসাবে হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান সহ সকল জাতির লোকজন স্নেহ সুলভ চোখে দেখে আসছিলেন। কিন্তু অশ্বিনী কুমার দত্তের নামে কলেজের নামকরণের আন্দোলনে স্বগোত্রীয় নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ায়, বরিশালে ডাঃ মনীষা চক্রবর্তীর সার্বজনিন গ্রহণযোগ্যতা নিমেষেই শূন্যের কোঠায় চলে আসে। তাকে সর্বজনিন নেতা হিসাবে না দেখে এখন হিন্দু স্বগোত্রীয় নেতা এবং সুশীল বলে আখ্যা দিয়েছে অনেকে। সম্প্রতি করোনা মহামারীতে মাস্ক বিতরণ, মানবতার বাজার, ফ্রি এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস দিয়ে সার্বজনিন হিসাবে মানুষের অন্তরে তিনি যতটুকু জায়গা করেছিলেন তা নিমেষেই ম্লান হয়ে গিয়েছে। বরিশালে উদীয়মান এক রাজনৈতিক ও সমাজসেবক হিসাবে পরিচিত হওয়ার প্রাক্কালে সার্বজনিন মনীষা চক্রবর্তীর চরম গোত্র প্রীতির কারনে অতি অল্প সময়ে মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেয়া সম্ভাবনার মনীষা চক্রবর্তীর পথচলার মৃত্যু ঘটেছে বলে দাবী করেছেন সিংহভাগ মানুষ।

তার চরম গোত্র প্রীতি বরিশালের আবহমান পরিবেশকে অনেকটা ঘোলাটে করেছে। শুধু তাই নয়, বরিশাল মিডিয়া পাড়ায় মনীষার ছোট ছোট প্রোগ্রামকে যারা বড় হরফে ছাপিয়ে মনীষাকে উৎসাহিত করতেন, এখন তারাই বিতর্কিত মনীষা চক্রবর্তী বলে সংবাদ প্রকাশ করছেন। এভাবে অনেকেই অন্তর থেকে মনীষাকে দূরে ঠেলে দিয়েছেন। অনেকেই বলছেন জন বিচ্ছিন্ন কয়েকজন সুশীল নেতা, ডাঃ মনীষার অগ্রযাত্রাকে আগামী তিন যুগের ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছেন। জনবিচ্ছিন্ন কয়েকজনের কৌশলী ভূমিকায় মনীষার রাজপথে নামা এবং স্বার্থ হাসিলের জন্য শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের দাবীর আন্দোলনে রিক্সা চালক, অটোচালক ও শিশুদের নিয়ে রাস্তায় দাড়িয়ে আন্দোলন করায় বরিশালের আপামর মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এক সময় যারা মনীষা চক্রবর্তীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিল, এখন তারাই পিছনে বসে ডাঃ মনীষাকে ভৎসনা করছেন। গুটি কয়েক মানুষের কারণে মনীষার বাস্তব রুপ সর্বমহলে রুপায়িত হয়েছে। এদিকে সরকারি বরিশাল কলেজের নাম অপরিবর্তিত রাখার পক্ষে শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ পর্যায়ক্রমে কলেজ ছাত্রদের সাথে মাঠে নামতে শুরু করেছে।

গতকাল ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন, বরিশাল কলেজের ছাত্রদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে সদর রোডে মানববন্ধন করেছেন। আরও বিভিন্ন সংগঠন একাত্মতা ঘোষনা করবে বলে জানাগেছে। তাই অনেকে বলছেন সার্বজনিন নেতা থেকে ডাঃ মনীষা চক্রবর্তী এখন গোত্রীয় নেতা ও সুশীল হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছেন। সিংহভাগ মানুষ মনে করছেন ডাঃ মনীষা চক্রবর্তী সার্বজনিন মানুষ ছিলেন। সেখান থেকে সরে আসায় বরিশালে সার্বজনিন সম্ভাবনার মনীষা চক্রবর্তীর পথচলা ও ভূতপূর্ব আচরনের মৃত্যু ঘটেছে। যারা মনীষা চক্রবর্তীকে এই আন্দোলনে যুক্ত করেছেন তারা মনীষা চক্রবর্তীর অগ্রযাত্রাকে ভালো চোখে দেখেছেন কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। সংগৃহীত বরিশাল বিভাগের তথ্য কনিকা ফেসবুক গ্রুপ ।



আমাদের ফেসবুক পাতা




প্রয়োজনে কল করুন 01740665545

আমাদের ফেসবুক দলে যোগ দিন







Translate »