করোনায় শ্বাস কষ্টে প্রথমেই যা করবেন-ডা: রুমানা রশিদ

Spread the love

করোনা হলে শ্বাস কষ্টে প্রথমেই যা করবেন-ডা: রুমানা রশিদ

ঝলক নিউজ :
যাদের অক্সিজেন কম বা অক্সিজেন সাপ্লিমেন্ট এর মাধ্যমে স্বাভাবিক অবস্থায় রাখতে হয় এরকম অবস্থায় সজাগ সচেতন রোগী নিজে নিজেই যদি ছবির মত করে আধা ঘন্টা থেকে দুই ঘন্টা পর পর নিজে নিজেই পজিশন চেঞ্জ করেন তাহলে আশাব্যঞ্জক ভাবে অক্সিজেনের মাত্রার উন্নতি হয়। এই চিকিৎসা পদ্ধতিটি অনেকের বেলায় আরো জটিল অবস্থাতে যাওয়া প্রতিরোধ করে।
ছবিটির মত করে আপনাকে ১. আধা ঘন্টা থেকে দুই ঘন্টা প্রথমে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে হবে তারপর ২. ডান কাত হয়ে থাকতে হবে তারপর ৩. ছবিটির মত কৌণিক ভাবে বসে থাকতে হবে তারপর ৪. বাম কাত হয়ে থাকতে হবে অতঃপর আবার ১. উপুর হয়ে থাকতে হবে । এই সাইকেলটি চালিয়ে যেতে হবে দিনে ১৬ ঘণ্টার মত। এর মধ্যে খাওয়া-দাওয়া, বাথরুম, গোসল স্বাভাবিক নিয়মেই চলবে। ১ থেকে ৪ প্রতিটি position এ ই আধা ঘন্টা থেকে 2 ঘন্টা সময় দিতে হবে।
তবে যদি খুব বেশি শ্বাসকষ্ট হয়, ব্লাড প্রেসার কম হয়, হার্টবিট অনিয়মিত হয় বা শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি অনেক বেশি হয় তবে এ  পজিশন প্র্যাকটিস করা যাবেনা। আপনি যদি খুব বেশি স্থুল হয়ে থাকেন বা প্রেগনেন্সির মাঝামাঝি বা শেষ অবস্থায় অবস্থায় থাকেন সে ক্ষেত্রেও এটা করা অনুচিত। ঘাড়ে মেরুদন্ডে গুরুতর কোন আঘাত থাকলেও এটা করা সম্ভব হবে না।
ঐ পজিশনে অবস্থানের সময় পালস অক্সিমিটার দিয়ে প্রতি দুই ঘণ্টা পর পর SpO2 (সেচুরেশন) দেখতে হবে। অনেকক্ষেত্রে দেখা যাবে এই পজিশন প্র্যাকটিস করার কারণে সেচুরেশন বেশ ভালো মাত্রায় উন্নতি হয়েছে। যদি সেটা ৯৫% এর বেশী হয় তবে ১০ শতাংশ অক্সিজেন কমানো যেতে পারে।এভাবে দুই ঘন্টা পর পর অক্সিজেন কমিয়ে কমিয়ে যদি অক্সিজেন ছাড়াই ৯৩ শতাংশ বেশি মেন্টেন করতে পারে তাহলে অক্সিজেন বন্ধ করা যেতে পারে।
উপুর হয়ে থাকার সময় আপনি চাইলে কপালের নিচে একটি, বুকের নিচে দুইটি, পেটের একেবারে তলদেশে hip এরিয়ায় দুইটি, হাঁটুর নিচে একটি বালিশ ব্যবহার করতে পারেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে পেটের নিচে যাতে কোনোভাবেই কোনো চাপ বা বালিশ না থাকে, পেট কে রাখতে হবে একদম মুক্ত। শ্বাসের সাথে সাথে আপনার পেটকে প্রসারিত করার সুযোগ রাখতে হবে, বালিশ বা অন্য কিছু দিয়ে সেটা চেপে রাখা যাবে না।
মোটকথা এই Awake prone পজিশন প্রেকটিস এর মাধ্যমে নিখরচায় অন্য কারো হেল্প ছাড়াই আপনি নিজের রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়াতে পারেন এবং অক্সিজেন স্বল্পতা দেখা দেয়ার একদম প্রথম থেকেই শুরু করলে অনেকের ক্ষেত্রেই (শতভাগ নয় অবশ্য) আরো খারাপ অবস্থা থেকে নিজেকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়। এটি একটি প্রমাণিত চিকিৎসা পদ্ধতি।
ডান বা বাম কাত হয়ে শুয়ে থাকার সময় আপনি কোলবালিশের মত করে বালিশ ব্যবহার করতে পারেন তবে পেটের মধ্যে যাতে সেটা চাপ খেয়ে না থাকে তা খেয়াল রাখতে হবে।
আপনি যদি অক্সিজেনের support এ থাকেন তবে পজিশন চেঞ্জ করার সময় যাতে অক্সিজেনের নল, কোন যন্ত্রপাতি স্থানচ্যুত না হয়ে যায় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। একদম উপুড় হয়ে থাকাটা একেবারেই সম্ভব না হলে ডান বা বাম কাত হয়ে থাকলেও কিছুটা উপকার পাওয়া যাবে। ১৬ ঘণ্টা সম্ভব না হলে ১২ ঘণ্টা যদি করতে পারেন সেটাতেও কিছুটা উপকার পাওয়া যাবে।
ভেন্টিলেটরে চিকিৎসা দেওয়ার সময়ও এই prone পজিশন ব্যবহার করা হয় তবে সে ক্ষেত্রে আপনার কোনো হাত থাকবে না এ ব্যাপারে কারণ আপনি তখন এতটাই অসুস্থ যে সেটা চিকিৎসাকর্মীরা আপনাকে করে দিবে। সে অবস্থায় যাওয়ার আগেই একদম প্রথম থেকেই এই প্র্যাকটিস শুরু করে দিবেন। যতক্ষণ আপনি সজাগ সচেতন এবং নিজে নিজেই এটা করছেন ততক্ষণ এটাকে বলে awake Proning.
খুব অসুস্থ অবস্থায় অন্যরা যখন আপনাকে সেটা করে দিচ্ছে তখন awake শব্দ’টা বাদ দিতে হবে কারণ ততক্ষণে আপনি গুরুতর অসুস্থ, আর সজাগ সচেতন নন।
আসুন আমরা অক্সিজেন স্বল্পতা দেখা দেওয়ার একদম প্রথম থেকেই এই awake proning পদ্ধতি শুরু করি।



আমাদের ফেসবুক পাতা




প্রয়োজনে কল করুন 01740665545

আমাদের ফেসবুক দলে যোগ দিন







Translate »