নতুন কারিকুলামে দেশের শিক্ষা
সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি থাকছেনা না
সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি আর থাকবে না
অবশ্যই শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য সুখবর, যে নতুন কারিকুলামে আর সেই ভীতিকর সৃজনশীল পদ্ধতি থাকবে না। এর পরিবর্তে থাকবে নতুন অন্য পদ্ধতি। অবশ্যই যা ভীতিকর নয়। তবে কোন পদ্ধতি থাকবে সেটা প্রকাশ হবে আগামী নভেম্বরে।
আগামী বছর থেকে নতুন কারিকুলামে প্রবেশ করতে যাচ্ছে দেশের শিক্ষাব্যবস্হা| নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের শুরুর বছরে প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন বই দেওয়া হবে| এরপর ২০২৫ সালের মধ্যে মাধ্যমিক স্তরে সব শ্রেণিতে বাস্তবায়ন হবে|
নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী, বিষয় ও পরীক্ষা কমিয়ে বইয়ে আনা হয়েছে পরিবর্তন| প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা এক বছরের পরিবর্তে দুই বছর হবে| দশম শ্রেণির আগে কোনো পাবলিক পরীক্ষা থাকবে না| এক জন শিক্ষার্থী বিজ্ঞান, মানবিক নাকি ব্যবসায় শিক্ষায় পড়বে, সেটি ঠিক হবে উচ্চমাধ্যমিকে গিয়ে| নতুন কারিকুলামে সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে দুই দিন|
তবে এই কারিকুলামে পরীক্ষার প্রশ্ন পদ্ধতি কী হবে এ বিষয়টি নিয়েই সবার আগ্রহ রয়েছে| কারণ চলমান সৃজনশীল পদ্ধতি নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের ভীতিএখনো রয়েছে| তাই তারাও চাইছেন এ পদ্ধতি না থাকুক| সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের পর পরীক্ষায় সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি থাকবে না| কোন পদ্ধতির আলোকে প্রশ্ন থাকবে তা প্রকাশ করা হবে নভেম্বরে|
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ জানান, সৃজনশীল পদ্ধতিতে আগামী বছর থেকে তো আর পরীক্ষা থাকছে না| উন্নত বিশ্বের পরীক্ষা পদ্ধতির আলোকেই তৈরি করা হয়েছে| একই তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার, নতুন কারিকুলামে সৃজনশীল প্রশ্ন থাকছে না| সেখানে অন্য রকমের প্রশ্নপত্র হবে|
আর জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য (কারিকুলাম) অধ্যাপক ড. মশিউজ্জামান বলেন, পরীক্ষার প্রশ্ন পদ্ধতি কেমন হবে আগামী নভেম্বরে প্রকাশ করা হবে| কেন বিলম্বে প্রকাশ করা হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন প্রকাশ করা হলে নোট গাইড মালিকরা আগেভাগেই এগুলো ছাপিয়ে ফেলবে|
মুখস্হনির্ভর পড়াশুনার পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত মেধা যাচাই করার লক্ষ্যে সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি চালু হয়েছিল| ২০০৮ সাল থেকে দেশে যখন এটি চালু করা হয়, তখন বলা হয়েছিল, এই পদ্ধতিতে নোট-গাইড বই থাকবে না, কোচিং-প্রাইভেট বন্ধ হয়ে যাবে| কিন্তু ফল হয়েছে উলটো| শিক্ষকরাই বিষয়টি ভালোভাবে না বোঝায় শিক্ষার্থীদের কোচিং-প্রাইভেট বা সহায়ক বইয়ের দ্বারস্হ হতে হচ্ছে আগের চেয়ে আরো বেশি| অভিভাবকদেরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে| ভীত রয়েছেন শিক্ষকরাও| প্রায় ৪২ ভাগ শিক্ষকের এ বিষয়ে ধারণা নেই| এসব কারণে এ পদ্ধতি বাতিলের দাবি ছিল শুরু থেকেই| অনেকেই মনে করছেন, সৃজনশীল পদ্ধতি চালু করাই ছিল শিক্ষায় সবচেয়ে বড় ভুল সিদ্ধান্ত| যার খেসারত দিয়েছে সবাই|
https://www.youtube.com/watch?v=qa732gGv04A&t=334s