বই বিতচরণ প্রসঙ্গে
সত্যের অন্বেষণের সহীহ দ্বীনি গ্রন্থ বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত
ফেব্রুয়ারি ২২ ২০২১, ২২:৫৩
সত্যের অন্বেষণের সহীহ দ্বীনি গ্রন্থ বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত
মো. পলাশ খান
ভাষার মাসে বাংলা ভাষায় সহীহ দ্বীনি গ্রন্থ পাঠকের হাতে তুলে দিয়ে প্রতিটি ঘরে সহীহ দ্বীনকে পৌছে দেয়ার লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে সত্যের অন্বেষণ ফরিদপুর আজ (রবিবার) সম্পাদন করেছে সহীহ দ্বীনি গ্রন্থ বিতরণ কার্যক্রম ২০২১। ‘পড়ি সহীহ দ্বীনি বই, শিরক্্ ও বিদ‘আত মুক্ত হই’ প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সভায় সভাপতিত্ব করেন মো. আলাউদ্দিন।
মো. বাকী বিল্লাহ খান পলাশের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ফরিদপুর পৌরসভার ২৩ নং. ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ইকবাল হোসেন ফয়সাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন ফরিদপুর গেরদা সৌদি জামে মসজিদের সভাপতি সৈয়দ গিয়াস উদ্দিন ও দারুস সুন্নাহ মহিলা মাদ্রাসার পরিচালক মো. ফরিদুল ইসলাম। সভায় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মো. আব্দুল মোতালেব, মো. আবু বকারসহ প্রমুখ।
মো. আব্দুল মোতালেব বলেন, সহীহ দ্বীনি জ্ঞান অর্জণ ও তা প্রচার আমাদের অপরিহার্য দ্বায়িত্ব। কেননা এ সম্পর্কে হাদীসে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে আমার ইবনে আস (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (ছা.) বলেন, ‘আমার পক্ষ থেকে জনগণকে (আল্লাহর বিধান) পৌঁছে দাও, যদিও একটি আয়াত হয় (বুখারী, হাদীস নং. : ১০৭)।
মো. আবু বকর বলেন, সহীহ দ্বীনি জ্ঞান অর্জণের গুরুপ্ত ও ফজিলত অপরিসীম। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেন, যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে, আল্লাহ তাদেরকে বহু মর্যাদায় উন্নত করবেন (সূরা মুজাদালা, আয়াত নং. : ১১)। মুআবিয়াহ (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছা.) বলেন, আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকেই দ্বীনি জ্ঞান দান করেন (বুখারী, হাদীস নং. : ৭১, মুসলিম, হাদীস নং. : ১০৩৭)।
মো. বাকী বিল্লাহ খান পলাশ সত্যের অন্বেষণ আয়োজিত বই বিতরণ কার্যক্রমে বই প্রদান করে সহযোগীতা করায় মো. নরুজ্জামান স্বপন এর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমাদের প্রত্যেকেরই যার যার অবস্থান থেকে অন্তত একটি হলেও সহীহ দ্বীনি বই, দ্বীনি তথ্য অপর ভাইয়ের নিকট পৌছে দেয়া উচিত কেননা ইবনে মাসউদ (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (ছা.) বলেন, আল্লাহ সেই ব্যক্তির শ্রীবৃদ্ধি করুন, যে ব্যক্তি আমার নিকট থেকে (আমার কোন) হাদীস শুনে যথাযথরূপে হুবহু অপরকে পৌঁছে দেয়। কেননা, যাকে হাদিস বর্ণনা করা হয় এমনও হতে পারে যে, সে শ্রোতা অপেক্ষা অধিক উপলদ্ধিকারী ও স্মৃতিধর (তিরমিযী, হাদীস নং. : ২৬৫৭, ২৫৫৮)।
মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে আমাদের চূড়ান্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত কেননা আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) হতে বর্নিত, রাসূল (ছা.) বলেন, আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার প্রতি মিথ্যা (বা জাল হাদীস) আরোপ করে, সে যেন নিজ আশ্রয় জাহান্নামে বানিয়ে নিলো ((শেষ অংশ) বুখারী, হাদীস নং. : ১০৭)। তিনি আরো বলেন, ধর্মীয় বিষয়ক আমাদের সত্য ও সঠিকটি জানানো একান্ত কর্তব্য কেননা আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (ছা.) বলেন, যাকে ধর্মীয় জ্ঞান বিষয়ক কোন কথা জিজ্ঞেস করা হয়, আর সে (যদি উত্তর না দিয়ে) তা গোপন করে, কিয়ামতের দিন তাকে (জাহান্নামের) আগুনের লাগাম পরানো হবে (তিরমিযী, হাদীস নং. : ২৬৪৯, আহমাদ. হাদীস নং. : ৭৫১৭, ৭৮৮৩)।
সৈয়দ গিয়াস উদ্দিন বলেন, দ্বীনি জ্ঞান অর্জন এবং অর্জনকারীর মর্যাদা সুউচ্চ হলেও আমাদের সমাজে দ্বীনি জ্ঞান অর্জন সম্পর্কে এমন বর্ণনা ছড়িয়ে আছে যাকে হাদীস হিসাবে চালিয়ে দিলেও তা মূলত হাদীস নয় যেমন বর্ণনা করা হয় ‘জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রয়োজনে চীন দেশেও যাও কিংবা আলেমের ঘুম আবেদের সারারাত জেগে ইবাদত করার সমান ইত্যাদি।
চিরকুটে সুইসাইড নোট লিখে এনজিও কর্মীর আত্মহত্যা !!!
মো. ইকবাল হোসেন ফয়সাল বলেন, ইসলামের ক্ষেত্রে যেটা সঠিক এবং সত্য সেটাকেই গ্রহণ করা কর্তব্য। কেননা আমরা যে ইবাদতটুকু করছি তা রাসূল (রা.) এর আমল না হলে তা মহান আল্লাহর নিকট গ্রহণীয় নয় আর যা আল্লাহ গ্রহণ করবেন না তা করার মধ্যে কোন প্রাপ্তি নেই।
মো. আল্লাউদ্দিন বলেন, আামাদের দ্বীনি জ্ঞান অর্জন করা উচিত একমাত্র মহান আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টির জন্য কেননা আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্নিত, রাসূল (ছা.) বলেন, যে ব্যক্তি এমন কোন জ্ঞান অর্জন করল, যার দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়. তা সে কেবল পার্থিব স্বার্থ লাভের উদ্দেশ্যে অর্জন করল, কিয়ামতের দিন সে ব্যক্তি জান্নাতের সুগন্ধ পাবে না ( আবু দাউদ, হাদীস নং. : ৩৬৬৪, আহমাদ, হাদীস নং. : ৮২৫২)। সুতরাং আমাদের সকল আমল সহীহ সুন্নাহ্ মোতাবেক হওয়া বাঞ্চনীয়।