মৃত নারীদের ধর্ষণের অভিযোগের মুন্না সিআইডির অভিনয়ে ধরা
নভেম্বর ২০ ২০২০, ১৬:৪০
রাজধানীর সো’হরাওয়ার্দী হাসপাতালের ম’র্গে থাকা মৃত নারীদের ধর্ষণের জঘন্য’তম অপরাধের অভিযোগ উঠেছে মুন্না ভগত (২০) নামে এক ডোম সহ’কারীর বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যে ওই যুবককে আ’টক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পুলিশে’র তদন্তে বেরিয়ে এসেছে মুন্নার কুকীর্তির নাট’কীয় সব ঘটনা।
সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, ডো’ম জতন কুমার লালের ভাগিনা মুন্না ভ’গত। তিনি মামার সঙ্গেই ওই হাসপাতাল ম’র্গে সহযোগী হিসেবে কাজ করত। দুই-তিন ব’ছর ধরে মুন্না মর্গে থাকা মৃত নারীদের ধর্ষ’ণ করে আসছিল। এ অভিযোগের স’ত্যতা পেয়ে বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) তা’কে আটক করে সিআইডি। মুন্নাকে ধরতে বি’শেষ কৌশল নিতে হয় সিআইডিকে।
অনুস’ন্ধানে নেমে সিআইডি জানতে পারে, সোহরাও’য়র্দী হাসপাতালের মর্গের মূল ডো’ম রজত কুমার। তাকে সহা’য়তা করে আরও ৫/৬ জন। তা’র মধ্যে রজতের ভাগ্নে মুন্না ভগ’ত রাতে মর্গের পাশেই একটি ক’ক্ষে থাকে। মুন্নাকেই সন্দেহ হয় সিআইডির। গুমের ‘শিকার হওয়া এক যুবকের স্বজন সে’জে মুন্নার সাথে সখ্যতা গড়ে তো’লেন সিআইডির দুই কর্ম’কর্তা। তাদের একজন জানান, বে’শ কয়েকদিন লাগাতার তারা মু’ন্নাকে ফলো করতে থাকেন। রা’তে মুন্নাই থাকে এটি নিশ্চিত হতে তা’রা রাত ১টা বা ২টায়ও মর্গে গি’য়েছেন। ছবি দেখিয়ে জানতে ‘চেয়েছেন এই চেহারার কো’নো লাশ মর্গে এসেছে কিনা। সম্পর্ক গা’ঢ় হলে, কৌশলে মুন্নার পান ক’রা সিগারেটের ফিল্টার সংগ্রহ ক’রেন তারা। ফিল্টার থে’কে সংগ্রহ করা ডিএনএ’র সাথে মি’লে যায় ওই পাঁচ কিশোরীর দেহে পা’ওয়া ডিএনএ’র।
এর আগে ১০ নভে’ম্বর সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবের বিশ্লে’ষকরা নড়েচড়ে বসেন। ‘কো’ডেক্স’ নামে যে সফটঅয়্যারে ডাটা বিশ্লেষণ ক’রা হয় সেটি সংকেত দেয় যে ৫টি মৃতদেহে এক ব্য’ক্তির ডিএনএ পাওয়া গে’ছে। পাঁচ ভিক্টিমই কিশোরী। তা’দের বয়স যথাক্র’মে- ১১, ১৩, ১৪, ১৬ এবং ১৭ বছর। এগুলোই ফাঁস দি’য়ে আত্মহত্যার ঘটনা। ৫টি আ’ত্মহত্যার ৪টি মিরপুর এবং ১টি ঘটেছে মো’হাম্মদপুর এলাকায়। ২ টি ঘটেছে ২০১৯ সা’লের মার্চ ও অক্টোবর মাসে। বাকি তি’নটির একটি এ বছরের মার্চ ও ২টি আগস্ট মা’সে ঘটেছে। সময়, এলাকা, বয়স ও লিঙ্গ এক’ই ধরনের হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে সি’আইডির ধারণা হয় ভিক্টিমরা কোনো সি’রিয়াল কি’লারের শিকার।
২০১৫ সালে হাইকোর্ট এক আদিবাসী নারীর অ’পমৃত্যু মামলার রায়ে এক ঐতি’হাসিক নির্দেশ দেন। তাতে বলা হয়, কোনো না’রীর অপমৃত্যু হলে, তা’দের যৌনাঙ্গ থেকে শুক্রাণু সং’গ্রহ করে সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ ক’রতে হবে। দেখতে হবে অপমৃত্যুর আগে কোনো ধর্ষণের ঘট’না ঘটেছে কিনা। তারপর থে’কে সিআইডির ফরেনসিক ল্যাব আ’দালতের নির্দেশ মেনে আসছে।
সিআইডির এক ক’র্মকর্তা জানান, শিগগিরই ওই সিরিয়া’ল কিলার আরও হত্যাকাণ্ড ঘ’টাতে পারে এমন আ’শঙ্কা নিয়ে তদন্তে নামেন তারা। তারা মো’হোম্মদপুর ও কাফরুল থানায় হও’য়া ৫টি অপমৃত্যুর মামলার ত’দন্ত কর্মকর্তার সা’থে কথা বলেন। তাতে তারা জানতে পারেন, ৫টি মা’মলার ভিক্টিমের সুর’তহালে কোনো ধরনের জোরজবরদ’স্তির আলামত পা’ওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তে প্রতিটি ঘটনাকে আত্ম’হত্যা বলা হয়েছে।
এছাড়া, প্র’ত্যেক ভিক্টিম দরজা লাগিয়ে আ’ত্মহত্যা করেছেন। ৩টি ঘ’টনায় স্বজনদের খবর পেয়ে পু’লিশ গিয়ে দরজা ভেঙে মৃতদেহ উ’দ্ধার করেছে। সব মিলিয়ে সি’আইডির কর্মকর্তারা সি’দ্ধান্তে আসেন তাদের প্রাথমিক ধা’রণা ভুল। এরপরই ওই অ’ভিনয়ের ‘আশ্রয় নেয় সিআইডি।