বার কাউন্সিলের প্রকাশিত
রিভিউ রেজাল্ট বহাল রাখা যৌক্তিক দাবি
নভেম্বর ২৭ ২০২৫, ১০:৫৪
রিভিউ রেজাল্ট বহাল রাখা যৌক্তিক দাবি

আজকের ঝলক নিউজ
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল হলো দেশের আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা, যারা আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্তি, প্রশিক্ষণ, পরীক্ষা গ্রহণ এবং পেশাগত নীতিমালা নির্ধারণ করে
চলতি বছর জুনে অনুষ্ঠিত হয় আইনজীবী হিসেবে তালিকাভূক্তির লিখিত পরীক্ষা সেই পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয় ২৫ অক্টোবর ২০২৫ , সেখানে প্রায় ৮ হাজার পাশ করে। এরপরে বার কাউন্সিলের রিভিউর নোটিশ অনুসারে নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে রিভিউ আবেদন করেন কিছু পরীক্ষার্থী যারা মনে করেছেন তারা লিখিত পরীক্ষায় পাশ করার যোগ্য। রিভিউর আলোকে বার কাউন্সিল ১৮ নভেম্বর একটি রেজাল্ট প্রকাশ করে যেখানে ১৯১৪জনকে পাশ কানো হয়। এরপরে পাশকৃত শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা ভাইবার জন্য প্রস্তুতি গ্রহন করেন। হঠাৎ করে ২৩ নভেম্বর ২০২৫ বার কাউন্সিল একটি নোটিশ দিয়ে উক্ত রেজাল্ট বাতিল করে। সাথে সাথে রেজাল্ট প্রপ্তরা প্রতিবাদ করেন এবং রিভিউ রেজাল্ট বহালের জন্য আন্দোলন শুরু করেন। ২৪/১২/২০২৫ তারিখর ভাইবা স্থগিত হয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থগিত হওয়া ভাইবার তারিখ পুননির্ধারণ করলেও রিভিউর রেজাল্ট বহাল রাখা হয়নি এখনো। এ নিয়ে রিভিউতে পাশকৃত ১৯১৪জনে একটি মানসিক ও সামাজিকভাবে ট্রমার মধ্যে চলে যাচ্ছেন।
এ বিষয় বিভিন্ন অভিজ্ঞ আইনজীবীরা তাদের ফেসবুক ও গনমাধ্যমে জানিয়েছেন একটি ফলাফল জনসম্মুখে প্রকাশ করে তা বাতিল করার নজির বাংলাদেশে নয় পৃথিবীর কোথাও নাই। তাই মানবিক দিক বিবেচনা করে এই ফলফল পুনর্বহাল রাখা উচিত। কারণ এই ফলাফল প্রকাশে তো রিভিউতে আবেদনকারীদের কোনো অপরাধ নেই।
রিভিউকারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, একজন বলেন, ‘‘আমরা বার কাউন্সিলের রিভিউ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করি এবং প্রকাশিত ফলাফলে আমরা উত্তীর্ণ হই। কিন্তু পরবর্তীতে ফলাফল সংশোধন/বাতিল/স্থগিত করা হয়েছে , যা আমাদের মতো পরিশ্রমী ও যোগ্য প্রার্থীদের জন্য অত্যন্ত হতাশাজনক এবং ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারের জন্য অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
আমরা বিশ্বাস করি—রিভিউ প্রক্রিয়া যেভাবেই হোক সেটি বার কাউন্সিলের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। রেজাল্ট প্রকাশের পরে আমরা তা পরিবারে, সমাজে জানিয়েছি মিস্টি বিতরণ করেছি, নতুন করে পোষাক পরিচ্ছদ বানিয়েছি ভাইবা দেয়ার জন্য। এখন আমরা কিভাবে সমাজে মুখ দেখাব ‘’।
তাই বার কাউন্সিলের প্রতি অনুরোধ করবো, রিভিউ রেজাল্ট পুনর্বহাল করে যা ইচ্ছে করুন।

বিভিন্ন ফেসবুক পোস্টে বিভিন্নভাবে দাবি উপস্থাপন করা হয়:
১. যেহেতু বার কাউন্সিল সভার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিয়ে জনসম্মুখে রেজাল্ট প্রকাশ করেছে সেটি বাতিল করা অন্যায়।
২. যেহেতু রিভিউ প্রার্থিরী দ্রুত রেজাল্ট প্রকাশের জন্য আন্দোলন বা চাপ প্রয়োগ করেনি তাই রেজাল প্রকাশের প্রক্রিয়া বার কাউন্সিলের ব্যাপার রিভিউ প্রার্থিরা দায়ি নয়।
৩. যেহেতু হাইকোর্ট পরীক্ষায় বার কাউন্সিল লিখিত পরীক্ষার রিভিউ আছে সেক্ষেত্রে এটি অবৈধ নয়
৪. যেহেতু যথা নিয়মে ফি পরিশোধ করে রিভিউ করেছেন এবং নোটিশের মাধ্যমে রিভিউ রেজাল্ট প্রকাশ করা হয়েছে সেহেতু এই রেজাল্ট বাতিল গ্রহনযোগ্য নয়।
৫. যেহেতু রিভিউ রেজাল্ট পেয়ে শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা ভাইবা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন প্রয়োজনীয় পোষাক পরিচ্ছদ, ডায়েরি লিখে প্রস্তুতি নিয়েছেন, অনেকে দেশের বাইরে থেকে দেশে এসেছেন, অনেকে মফস্বল থেকে ঢাকায় অবস্থান করেছেন, যা ব্যয়বহুল ও মানবিক বটে।
৬. যেহেতু রেজাল্ট প্রকাশে উক্তিন্যরা পরিবারে সন্তান, পিতা-মাতা, সহধর্মিনী, আত্নীয় স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, সহকর্মীদের কাছে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান দিয়েছেন। রেজাল্ট বাতিল হলে এই মানুষগুলো দীর্ঘমেয়াদী মানসিক ও সামাজিক সমস্যায় পতিত হবে যার খেসারত পুরো জাতিকে দিতে হবে। ইতিমধ্যে রেজাল্ট স্থগিতের খবর পেয়ে দুজন স্টোক করেছেন যার মধ্যে একজন ইন্তেকাল করেছেন ( ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নইলাহি রাজিউন)।
৭. আইনজীবী একটি সম্মানজনক পেশা, তবে যার কোনো বেতন নেই, তাই এই রেজাল্ট প্রকাশ হলে বার কাউন্সিল বা রাস্টের আর্থিক ক্ষতি হবেনা। পেশা এখানে এরকম রেজাল্ট বাতিল হলে তারা আইনপেশায় মনোযোগী হতে পারবেনা।
৮. রিভিউ রেজাল্ট বহাল রাখলে কোনো ক্ষতি নাই বরং নতুন করে যারা আবেদন করেছেন তাদের জন্য খাতা ওপেন করতে পারেন বার কাউন্সিল।
৯. সুতরাং ফলাফল বাতিল একটি কলংকজনক অধ্যায়। উক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করে, ১৯১৪জন মানুষের মানসিক,সামাজিক ও সার্বিক দিক বিবেচনা করে রিভিউ ফলাফল বহাল রাখার নোটিশ প্রদান করে বার কাউন্সিল তার সম্মান অটুট রাখুক।
বাংলাদেশে রেজাল্ট প্রকাশ করে বাতিল করার নজির নেই।
শুধু একবার ভাবুন, আপনার কোনো ভাই বোন পরীক্ষায় পাশের খবর শুনে বাড়িতে আসছে, সবাইকে সে জানালো পাশ করছে, বন্ধু-বান্ধব, প্রতিবেশী সবাই জানলো পাশ করেছে, মসজিদে মিলাদও হলো। এর পরে আপনি শুনলেন আপনার ভাই, বোন, সন্তান পরীক্ষায় ফেল !! আপনার কেমন লাগবে? আপনার ভাই-বোন, সন্তানের কেমন লাগবে। সুতরাং বিষয়টি আবেগ, মানবিক ও যৌক্তিকতা দিয়ে ভাবুন। ১৯১৪জন পাশ করলে কি বারের খুব বেশি ক্ষতি হবে !! অন্য আইনজীবীদের কি রিজিক নষ্ট হবে ??
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, যা আইন পেশায় প্রবেশের পরীক্ষা গ্রহণ ও লাইসেন্স প্রদান করে। এর প্রধান দায়িত্বগুলো হলো:
-
আইনজীবী হিসেবে এনরোলমেন্ট পরীক্ষা নেওয়া
-
আইনজীবীদের রোল নম্বর প্রদান
-
আইনজীবীদের পেশাগত আচরণ নিয়ন্ত্রণ
-
ল’ এডুকেশনের মান নির্ধারণ
-
বার অ্যাসোসিয়েশনগুলোর কার্যক্রম সমন্বয়
-
https://www.barcouncil.gov.bd/an-urgent-notice-regarding-written-review-result/




























































































