পরশু আমি একটি এসএমএস পেয়েছি, যেটি আমাকে নিশ্চিত করছে যে, আমি এর আগেরদিন কোভিড ভ্যাকসিনের একটি বুস্টার ডোজ নিয়েছি। এটি ছিল ফাইজারের তৈরি টিকা। আমি জানি, আমার অনেক বন্ধু, এমনকি উন্নত দেশের অনেকেই এখনও ভ্যাকসিনের এই বুস্টার ডোজ পাননি। আমি নিশ্চিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী এই বছরের শেষ নাগাদ আমাদের মতো দেশে ৪০% মানুষ এই টিকা পেয়ে যাবে, আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে আমাদের ৭০% মানুষ কোভিডের টিকার আওতায় চলে আসবে। আমি আমার এই সরকারকে নিয়ে তাই গর্ববোধ করি, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন পর্যন্ত ৩১ কোটি ভ্যাকসিন দেশের মানুষের জন্য নিশ্চিত করেছেন, অথচ বিশ্বের শত শত দেশ এখনো ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য লড়াই করছে।
আমি আশা করি বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিন বিতরণে সমতা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে। আমি জানি জাতিসংঘের সংস্থাগুলি, বিশেষ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ইউনিসেফ এই বিষয়ে তাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
আজ বছরের শেষ দিন, গতকালই ছিলো বছরের শেষ কর্মদিবস। কোনো একটি কারণে, আমার এক সহকর্মীর মতো আমিও বছরের শেষ কর্মদিবসে এসে বেশ হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। এর কারণ, খুব প্রয়োজনীয় একটি সরকারি আদেশ আমরা এখনো পাইনি। তবে আমি নিশ্চিত যে খুব শীঘ্রই এটা আামরা পাব। আমাদের জনগণের জন্য, যাদের জন্য আমরা কাজ করি, তাঁদের স্বার্থেই এই আদেশটি আমাদের প্রয়োজন।
২০২১ সালে বাংলাদেশের বেশকিছু তাৎপর্যপূর্ণ অর্জন রয়েছে। আমি নিশ্চিত যে আমরা ২০২১ সালের সাফল্যগুলো থেকে অনুপ্রেরণা নেব এবং জাতির এই সাফল্যের ধারাবাহিকতা আমরা আমাদের সাংগঠনিক পর্যায়েও অব্যাহত রাখবো। এমনকি ব্যক্তিগত পর্যায়েও আমরা সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার প্রয়াসে শরিক হবো। আজ আমাদের জিডিপি পাকিস্তানের তুলনায় দ্বিগুণ, এমনকি জিডিপি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আমরা ভারতের চেয়েও এগিয়ে । আমাদের মাথাপিছু আয় এই দুটি দেশের চেয়েই বেশি। আমাদের জাতীয় আয় ৫০ গুণ এবং মাথাপিছু আয় ২৫ গুণ বেড়েছে, খাদ্য উৎপাদন চার গুণ বেড়েছে, আমরা আমাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২.৫%-এ সীমাবদ্ধ রাখতে সক্ষম হয়েছি । আমাদের রপ্তানি বৃদ্ধি আমাদের প্রাথমিক সময়ের তুলনায় ১০০% বেড়েছে। ১৯৯০ এর দশকে দারিদ্র্য ছিল ৬০%, এখন তা মাত্র ২০% বা তার কম। মানব উন্নয়ন সূচকে শ্রীলঙ্কা ছাড়া আমরা দক্ষিণ এশিয়ার সবার সেরা। আমাদের এখন সামনের দিকে তাকানোর সময়, অতীতের ব্যর্থতা এবং অতীতের অপকর্ম নিয়ে আমাদের ব্যস্ত থাকা উচিত নয়।
কিন্তু, আজ আমি কিছু খবর দেখে বেশ বিচলিত, কারণ এসব ঘটনা খুবই আদিম, এবং আমরা সেগুলি নিয়ে লজ্জা বোধ করি। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা সরকারি অফিসেই কয়েকজনকে মারধর করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচারিত হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, একজন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে কিছু দায়িত্বশীল লোক মারধর করছে। আমরা আইন এভাবে হাতে তুলে নিতে পারি না। আমরা এই রাষ্ট্রহীন এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য আমাদের সীমান্ত খুলে দিয়েছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে, আমরা যদি ১৬ কোটি মানুষকে খাওয়াতে পারি তবে আমরা কেন এই ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে খাওয়াতে পারব না? হ্যাঁ, আমাদের অনেক সমস্যা রয়েছে, কক্সবাজারে আমাদের পরিবেশ-প্রতিবেশ-প্রানবৈচিত্র হুমকির মুখে রয়েছে, আমরা উন্নত দেশগুলি থেকে যথাযথ রাজনৈতিক সমর্থন পাচ্ছি না, তবে আমাদের উত্তম ও কার্যকর প্রজ্ঞা এবং খ্যাতি হারানো উচিত হবে না।