ভালোবাসা প্রকাশ পায় শ্রদ্ধা ও সন্মানে
কোনো মানুষই ভুলের উর্ধ্বে নয়
ডিসেম্বর ১৭ ২০২২, ২১:৫৪
‘‘কোনো মানুষই ভুলের উর্ধ্বে নয়’’-মো: জহিরুল ইসলাম
পৃথিবীতে সম্পর্ক একটি প্রাকৃতিক বিষয়। মন জবর দখলের বিষয় নয়। সম্পর্ক সবসময় মধুর ও মশ্রিণ হবে এমনটি ভাবা নিছক বোকামী। সম্পর্ক টিকে থাকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়।
“যে কোনো সম্পর্কে মাঝেমধ্যে ভুল বুঝাবুঝি হতেই পারে, এটা খুবই স্বাভাবিক বিষয় হিসাবে ধরে নিতে হবে। এই ভুল বুঝাবুঝি মানে এই নয় যে সম্পর্কটা ভুল, বরং একটুখানি মান অভিমান সম্পর্কটাকে আরো মধুর করে তোলে !! ভালোবাসা, আবেগ কিংবা অনুভূতি সম্পর্কের যেমন এক একটা অংশ, তেমনি মান-অভিমান কিংবা ভুল বুঝাবুঝিও সম্পর্কের একটা অংশ। ভালোবাসা মানে শুধুমাত্র সুন্দর মুহূর্তটাকে উপভোগ করা নয়, ভালোবাসা মানে মাঝেমধ্যে একাকীও অনুভব করা। মান-অভিমান বুঝতে পারা !! . একটু ভুল বুঝাবুঝি মানে এই নয় যে সম্পর্কের মানুষটা ভুল। একটুখানি স্পেস কিংবা দুরত্ব হওয়া মানে এই নয় যে সম্পর্ক থেকে বের হয়ে আসতে হবে। একটুখানি বিরতি মানে এই নয় যে ব্রেকাপ করে ফেলতে হবে, বরং একটু ভুল বুঝাবুঝি, দুরত্ব কিংবা বিরতি সম্পর্কের ভেতরটা সুন্দর করতে ওষুধের মতো কাজ করে !! . আমাদের যেমন শারীরিক চাহিদা থাকে, তেমনি সম্পর্কেরও চাহিদা থাকে, সম্পর্কের চাহিদা হলো স্পেস, সাময়িক স্পেস কিংবা দুরত্ব সম্পর্কটাকে আরো মজমুদ করে তোলে। একে অপরের প্রতি মায়া বাড়ায়, তবে এই স্পেস কিংবা দুরত্ব যেনো খুব বেশি সময় না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখা উচিত !! একটু ভুল বুঝাবুঝি হলেই কাউকে দূরে সরিয়ে দিতে নেই, একটু মান-অভিমান হলেই কাউকে ভুল ভাবতে নেই। একটু দুরত্ব হলেই অন্য কারো সাথে জড়িয়ে ফেলতে নেই বরং সবথেকে কাছের প্রিয় মানুষটার সাথেই মান-অভিমান বেশি হয়।
লবন ছাড়া তরকারি যেমন স্বাদ লাগে না, তেমনি একটু মান-অভিমান ছাড়াও সম্পর্কে তেমন আনন্দ লাগে না !! . ঐ সম্পর্কটাই সব থেকে সুন্দর যে সম্পর্কে একটু দুরত্ব, শত মান-অভিমান কিংবা ভুল বুঝাবুঝি হওয়ার পরেও দিন শেষে একে অপরের কাছে ফিরে আসে, আর যাই হোক কেউ কাউকে ছেড়ে চলে যায় না। দিনশেষে মানসিক শান্তি নিয়ে থাকা যায় এই ভেবে যে, সবকিছু ঠিক হয়েই যাবে শুধু একটু অপেক্ষা মাত্র !! তাই মানিয়ে নিতে শিখতে হয়, যদি সামান্য একটু ভুল বুঝাবুঝি কিংবা মান-অভিমানের কারণে কাউকে ছেড়ে চলে আসেন, তাহলে একের পর এক ছেড়েই আসতে হবে। ভালোবাসার মানুষ হয়ে কারো জীবনে বেশিদিন থাকতে পারবেন না, কারণ কোনো মানুষই ভুলের উর্ধ্বে নয় !!
আপনি যদি কোনো অভিমানের কারণে কোনো সম্পর্কের প্রতি অসম্মান করেন, সেটির দ্বায়ভার আপনার উপরে বর্তাবে। প্রকৃতি তার নিজস্ব নিয়মে প্রতিশোধ নেই যেটি আমরা হয়ত মাঝে মাঝে অনুভব করি আবার হয়ত অনুভব করিনা। তাই সম্পর্কের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া খুবই জরুরী। কথা হলো ভাসমান বিষয় যা যে কোনো ব্যক্তির কাছে থাকেনা অন্য ব্যক্তির মাধ্যমে ফেরৎ আসে, তাই সম্পর্ক ধরে রাখতে শব্দ চয়নের দিকে লক্ষ রাখুন। আপনি আপনার আপনজন সম্পর্কে বাজে কোনো মন্তব্য তৃতীয় কোনো ব্যক্তির কাছে করেন তার মাধ্যমে আপনি কতটুকো সুবিধা পেলেন, তা ভেবে দেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দিন শেষে আপনি যার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন বা করছেন বা খারাপ ভাবছেন তার চেয়ে খারাপ কি কাউকে আপনি দেখেন নি !! বা কতজন ভালোকে আপনি কাজ থেকে দেখলেন, যে আপনার সম্পর্কের ব্যক্তিকে খারাপ ভাবছেন। এগুলো যদি আপনি একাকী ভাবেন তাহলে দেখবেন নিজের দোষটি খুঁজে পেতে কষ্ট হবেনা।
আর আপনি যদি এখরোখা নীতিই অবলম্বন করেন, তাহলে দিন দিন দুরত্ব তৈরীর কারণ যে আপনি তা আপনি বুঝতে পারবেন না। সম্পর্ক একটি আস্থার স্থান বিশ্বাসের স্থান তা মোটেও মিথ্যা নয়। সম্পর্ক শুধু শারিরীক চাহিদার উপর নির্ভর করেনা, মানুসিক বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ তাই শুধু শারিরীক বিষয় এর প্রতি গুরুত্ব না দিয়ে আপনার নিজের বিষয় পরিস্কার করুন কারণ আপনি অন্যর কাছ থেকেও সেটা আশা করেন। আপনি একটি সমস্যা সমাধান করতে নিজেই যে একটি সমস্যা তৈরী করলেন সেটির দিকে লক্ষ রাখুন। মনে রাখবেন আপনি যাকে খুবই ভালো ভাবছেন তাকে আপনি কাছ থেকে চেনেন না। আর যাকে আপনি খারাপ ভাবছেন সে হয়ত অনেকের চেয়েই ভালো হতে পারে। যখন খুব বেশি খারাপ লাগবে। নিজেকে অসহায় মনে হবে। আপনি নিজের অন্যায়গুলো, নিজের পাপগুলো নিয়ে ভাবুন। দেখবেন অন্যের দোষটা খুব বড় বলে মনে হবেনা। মনে রাখবেন পৃথিবীর কোনো মানুষই নিষ্পাপ নয়। আবার আপনি যাকে নিষ্পাপ ভাবছেন তাকেও আপনি অতটা চেনেন না। নিজের সমস্যার সাথে যত তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ নিবেন সমস্যা দিন দিন তত বেড়ে যেতে পারে।
প্রেম করে বিয়ে করা স্ত্রীকে টাকার জন্য বেচে বেচে দিলেন…
রফিক সিকদারের বসন্ত বিকেল এর উৎসব শেষ হলো প্রিয় মানুষের চিতার অনলে