সময়টা খুব বেশীদিন আগের না – ভদ্র পরিবারগুলি টানাপোড়েনের মধ্যেও মূল্যবোধের নির্লোভ জীবনযাপন করেছে আত্মমর্যাদা নিয়ে। মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোয় ছিল উপচে পড়া সুখ। আদব-কায়দা, আশরাফ-আখলাকের কোনো ঘাটতি ছিল না। আমরাও টানাটানির সংসারে সুখ ও মর্যাদার জীবনই অনুশীলন করতাম । এখনো ও অনেকেই আছেন। নিম্নমধ্যবিত্তরাও কষ্ট সংগ্রামের জীবনযাপন করেছেন। উচ্চমধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্ত শ্রেণির মধ্যেও পরিশীলতা পরিমিতিবোধ ছিল। আন্তরিকতা ছিল ,কোন অহংবোধ ছিল না , পারস্পারিক সহানুভূতি -শ্রদ্ধাবোধ ছিল ।
আদর্শিক সৎ রাজনৈতিক নেতা-কর্মী নিরাভরণ সাদামাটা জীবনযাপনেই অভ্যস্ত ছিলেন সবাই । তেমনি ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। ঘুষ-দুর্নীতি কদাচিৎ শোনা যেত । এখনো অনেকেই করেন না। তদবির বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য, ভর্তি বাণিজ্য সেকালে ছিল না, একালে ব্যাপক হারে হচ্ছে। ব্যাংকের টাকা লুট, অর্থ পাচার, শেয়ারবাজার লুট, একালের ভয়ংকর অপরাধ। আদর্শ ব্যবসায়ী, শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, চিকিৎসকসহ নানা পেশায় প্রায় সবাই ছিলেন। এখনো আছেন। সিনেমা নাটক মডেলিংয়েও শিল্পীরা মর্যাদা সম্মান নিয়ে জনপ্রিয়তা লাভ করতেন। এখনো অনেকে তা ধরে রেখেছেন।
অনেকেই আবার নষ্টদের সারিতে ছিলেন না তা নয় কিন্তু তাদের ভিতরেও লজ্জাবোধ ছিল । মানুষ এখন লজ্জাত দুরের কথা ঘৃণা করতেও ভুলে গেছে । ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপালের নোংরা ভাষার অডিও নিশ্চিয়ই আপনারা শুনেছেন ? আমাদের সময় শিক্ষক মহোদয়দের কথা শুনার জন্য অধির আগ্রহে বসে থাকতাম –আর এখন খোদ প্রিন্সিপালের মূখেই শুনি কল তলার বস্তীবাসীর মত খিস্তি-খেওর ! ৯০ এর দশক পর্যন্ত ছাত্র রাজনীতিকে মানুষ আলাদাভাবে মর্যাদা দিত সম্মান করত আর বর্তমান সময়ে সাধারন মানুষ সেটা প্রত্যাখান করেছে ! এই যে ভয়ংকর পচনটা ধরলো তার উত্তরণের উপায় কি- বলতে পারেন কেউ !!!