সরানোর জন্য যতবেশি নড়াচড়া করবে আওয়ামী লীগের শিকড় ততবেশি পোক্ত হবে: শেখ হাসিনা
নভেম্বর ০৪ ২০২০, ০৩:৫০

স্বাধীনতা বিরোধীদের চ’ক্রান্ত চলতেই থাকবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী ও আও’য়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদেরকে সরানোর জন্য যত’বেশি নড়াচড়া করবে আওয়ামী লী’গের শিকড় তত বেশি মাটিতে শক্ত হবে, পোক্ত হবে। মঙ্গলবার বিকালে গণভবন থেকে ভি’ডিও কনফারেন্সে জেলহত্যা দিবস উপ’লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। আওয়ামী লীগ কে’ন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির শীর্ষ নেতারা গণ’ভবনের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত ছিলেন।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলে’ন, যে যেভাবে বলতে চেষ্টা ক’রুক না, ক্ষমতায় জনগণের ভোট, জনগণের সমর্থন নিয়েই আমরা এসেছি। আমাদেরকে সরা’নোর জন্য যতবেশি নড়াচড়া কর’বে আওয়ামী লীগের শিকড় তত বেশি মাটিতে শক্ত হবে, পোক্ত হবে। এটা হলো বাস্তব।
মাদক-সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ-দুর্নীতির বিরু’দ্ধে সরকারের অভিযান অ’ব্যাহত থাকবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদেশে সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, মাদক, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আ’মাদের অভিযান অব্যাহত থাক’বে। আমরা জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি, কাজ করে যাবো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন আমরা ২০০৮ এর প’র থেকে সরকারে এসে’ছি অনেক ভাবে চেষ্টা করা হয়েছে, ক্ষমতা উৎখাত করা নানাভাবে, বিডিয়ারের ঘটনা ঘটা’নো হলো, হেফাজতের ঘটনা, না’না ধরনের ঘটনা, বহু রকমের কারসাজি ঘটানোর চেষ্টা, কিন্তু জনসমর্থন না থাকলে ষড়যন্ত্র করে খুন’ করে ফেলা যায়, হত্যা করে ফেলা যায়, কি’ন্তু জনসমর্থন না থাকলে ক্ষমতায় গিয়ে কেউ ক্ষমতায় টিকে থা’কতে পারে না, মানুষের কল্যাণও করতে পা’রে না, এ হচ্ছে বাস্তবতা। আ’ওয়ামী লীগ টিকে আছে শুধু জনগণের জন্য কাজ করার মধ্যে দিয়ে। কা’রও দয়া ভিক্ষে করে না, ‘কারও করুণা ভিক্ষে করে না।
জাতির পিতা, জা’তীয় চার নেতাসহ বিভিন্ন সময় আ’ওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হত্যার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এত হত্যাকান্ড চালিয়েও যে সংগঠনটা তৃণমূলে যার শিক’ড় একেবারে গ্রথিত সেই সংগঠনে’র ক্ষতি তারা করতে পারে নাই। আওয়ামী লীগ টিকে আছে কারণ এর তৃণ’মূলের নেতা-কর্মী, অর্থাৎ এর শিকড়ের শক্তি অ’নেক বেশি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা শু’ধু এই দিবসটা পালন নয়, সেই সা’থে সাথে আমাদের এই কথা মনে রাখ’তে হবে, যে সমস্ত সন্ত্রাসী চক্র, খুনী চক্র, আমাদের স্বাধীনতা বিরোধী চক্র তারা কিন্তু বসে না’ই। তাদের চক্রান্ত চলতেই থাকবে, য’ত ভাল কাজই আমরা করি না কেন তাদে’র মুখ থেকে ভাল কথা বে’র হয় না।
কারণ তারা তো বাং’লাদেশের মানুষের কথা ভাবে না। ১৫ আগ’স্টের ঘটনা বা ৩ নভেম্বরের ঘটনার পরে তারা এই দেশে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে ক্ষমতাকে তারা ভোগ করবে সেটা তারা পারে নাই জ’নগণের কারণে। এখানেই তাদের ক্ষোভ। তাদের কাছে ক্ষমতা ছিল ভোগের বস্তু।
১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরি’বারে হত্যা এবং ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যার মধ্যে দিয়ে চক্রান্তকারীরা স্বাধীনতার চেতনাকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল মন্তব্য করে শেখ হাসিনা ব’লেন, ১৫ আগস্টের ঘটনা শুধু একটা পরিবারকে হত্যা না, একটা আদর্শকে হত্যা, একটা দেশকে হত্যা, দেশকে ধ্বং’স, সেটা আরও প্রমাণ হলো ৩ নভেম্বরের হত্যাকান্ডে।
আওয়ামী লীগ জনগণের ‘জন্য কাজ করে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা’ বলেন, আমাদের কাছে ক্ষমতা হচ্ছে জনগণের সেবা করা, আর জনগণের সেবাটাই আমরা করে যা’চ্ছি। সেবা করে যাচ্ছি বলেই যে’খানে ১৫ আগস্ট ভেবেছিল আর কোনদিন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে না, তারপর আমরা চা’র চার ক্ষমতায় এসেছি জনগ’ণের সমর্থন নিয়েই এসেছি। এটাই বাস্তবতা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটার পর একটা নি’র্বাচনে ভোটে জয়ী হয়ে আমরা সরকা’র গঠন করি। কারণ হচ্ছে আমরা জনগণের জন্য কাজ করি। আমরা জনগণের জন্য কা’জ করি বলেই জনগণ আমাদের সমর্থন ক’রেছে। যারা নির্বাচনে জনগণের কাছে যেতেই পারে না, জনগণের কাছে ভোট চাইতে পারে না, যা’দের সংগঠনই তৃণমূল থেকে গ’ড়ে’ উঠেনি। মানুষ তাদের পাশে দাঁড়াবে কেন?
আওয়ামী লীগের জন’প্রিয়তা অনেকে চক্ষুশূল ম’ন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, এখন নানা কথা, একেকজন একেক জায়গা থেকে নানা বচন দিচ্ছে, না’না কথা বলছে, তারা প্রশ্ন করছে, অনেকে নানা ধ’রনের প্রশ্ন করে, আবার কারও কারও কথা বাংলাদেশকি একদলেই চলে যাচ্ছে। সত্যিকারের জনগণের দল, হ্যাঁ আমা’দের কিছু বাম দল আছে যারা সাধারণ মানুষকে নিয়ে রাজনীতি করে, কমিউনিস্ট পার্টি আছে ‘সাধারণ মানুষ’কে’ নিয়ে রাজনীতি করে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে গণতান্ত্রিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ, যে আওয়ামী লীগ তৃণমূল থে’কে গড়ে উঠে’ছে মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে, যে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাংলা’দেশ স্বাধীন হয়েছে।
তিনি বলেন, যে আ’ওয়ামী লীগের নেতাদের একের পর এক হ’ত্যা করা হয়েছে। জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছে, জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছে, সেই সাথে সাথে আমাদের বহু নেতাক’র্মীকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের ওপর বার বার আঘাত এসেছে, ২১ আগস্ট থেকে শুরু ক’রে, সেই ৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি, বিভিন্ন স’ময় বার বার আঘাত এসেছে। এত হ’ত্যাকান্ড চালিয়েও, যে সংগঠনটা তৃণমূলে যা’র শিকড় একেবারে গ্রথিত সেই সংগঠ’নের ক্ষতি তারা করতে পারে নাই। আওয়ামী লীগ টিকে আছে কারণ এর তৃণমূলের নেতা-ক’, অর্থাৎ এর শিকড়ের শক্তি অ’নেক বেশি। আর সেটা যদি কারো চক্ষুশূল হয় বা মনো ব্যথার কারণ হয় সেখানে আমাদের কিছু বলা’র নাই।
আমরা জনগণের স’মর্থনটা পাই কেন? আওয়ামী লীগ ক্ষ’মতায় আসলে জনগণের স্বার্থে কাজ করে, জনগণের কল্যাণে কাজ করে, জনগণের মঙ্গলের জন্য কাজ করে, আর জনগণ সে’টা খুব ভালভাবে উপলব্ধি ক’রে, আর এর শুভফলটা জনগণই পায়।
আওয়ামী লীগ এলিট শ্রেণি নয় সা’ধারণ মানুষের জন্য কাজ করে মন্ত’ব্য করে শেখ হাসি’না বলেন, আমাদের সরকারের কাযর্ক্রমে একটা গ্রুপ বা এলিট শ্রেণি সুবিধা পায় না, বরং সুবিধাটা একেবারে গ্রাম পর্যা’য়ের ঘরের দৌরগোড়ায় পৌঁ’ছে যায়। সেই কারণে তারা আমাদের সমর্থন দেয়, আম’রা তাদের স’মর্থন পাই।
জিয়া-খালেদা-এরশাদ আমলের সমা’লোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, তা’রা তাদের অবৈধ ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য দেশে দুর্নীতির বীজ বপন করেছিল। একটা এলিট শ্রে’ণি তৈরি করেছে। জিয়াউর রহ’মান নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস ক’রেছিল। আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রা’খেন আওয়ামী লীগ সাধা’রণ সম্পাদক, স’ড়ক পরি’বহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বরসহ বিভিন্ন আন্দো’লন সংগ্রামে শহীদের স্মরণে ১ মি’ট নিরবতা পালন করা হয়।