এবার শুঁটকি তৈরি শিখতে বিদেশ যাবেন ৩০ কর্মকর্তা!
অক্টোবর ১৫ ২০২০, ০৩:০৭

শুঁ’টকি উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ শি’খতে ৩০ জনকে বিদেশে পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি)। এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি ৭০ লাখ টাকা। ‘কক্সবাজার জেলায় শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প স্থাপন’ প্রকল্পের অধীনে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের মো’ট ব্যয় ধরা হয়েছে ২০০ কোটি ৩৯ লা’খ টাকা। চলতি স’ময় থেকে ২০২৩ সালের ডি’সেম্বর মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রকল্পের প্রস্তাবনা পরি’কল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে বিএফডিসি। প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। তবে করোনা মহামারির কারণে দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতায় বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বৈদেশিক প্রশিক্ষণ খাতের ব্যয় কমানো প্রয়োজন বলে মত দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। প্রকল্পের আ’ওতায় একটি জিপ, একটি ডাবল কেবিন পিকআপ, একটি মাইক্রোবাস ও চারটি মোটরসাইকেল কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু যানবাহনের জন্য অর্থ বিভাগের জনবল কমিটি কোনো গাড়িচালকের পদ সুপা’রিশ করেনি। প্রকল্পের ডিপিপিতে এসব বিষয় সংশো’ধন করতে বলেছে পরিকল্পনা কমিশন।
বিদেশে প্রশিক্ষণ নেওয়া ছাড়াও অ’ভ্যান্তরীণ প্রশিক্ষণ বাবদ ১ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ৪ হাজার ৮৫৫ জন বিএফডিসির কর্মকর্তা, কর্মচারী, উপকারভোগী ও স্টেকহোল্ডারের জন্য প্র’শিক্ষণ বাবদ এই টাকা ব্যয় হবে। প্রতিজনের প্রশিক্ষণ ভাতা ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫০০ টাকা। প্রশিক্ষণ সামগ্রী (ব্যাগ, নোট প্যাড ও কলম) বাবদ ১ হাজার ২০০ টাকা ব্য’য় ধরা হয়েছে। নাস্তা ও দুপু’রের খাবার বাবদ প্রতি’জনের জন্য ব্যয় হবে ৫০০ টাকা।
শুঁটকি প্রক্রি’য়াজাতকরণে এগিয়ে আছে জাপান, আইসল্যান্ড, জার্মানি ও ফ্রান্স। প্রশিক্ষণের জন্য এসব দেশ বেছে নেবে বিএফডিসি। ৩৫০টি গ্রিন হাউস মেকানিক্যাল ড্রা’য়ার এবং ৩০টি মেকানিক্যাল ‘ড্রায়ার নির্মাণ করা হবে। এসব পরিচালনার জন্য বিদেশে প্রশিক্ষণ প্রয়োজন বলে দাবি করেছে বিএফডিসি।
বিদেশ প্রশিক্ষণ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক (পরি’কল্পনা) মো. শামসুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শুঁটকির উৎপা’দন বৃদ্ধি ও প্রক্রিয়াজাতকরণ শিখতে ৩০ জন কর্মকর্তা প্রকল্পের আওতায় বিদেশ যাবেন। সবাই প্রসেসিং কর্মকর্তা। প্রকল্পের আওতায় বিদেশ থেকে মেশিন কেনা ‘হবে। এসব মেশিন পরি’চালনাও শেখার প্রয়োজন আছে। বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এলে শুঁটকির মান বাড়বে।’
প্রকল্পের আওতায় আড়াই হাজার বর্গমিটার আয়তনের অবতরণ শেড, ১ হাজার ৮৬০ বর্গমি’টার আয়তনের চারতলা ল্যাব, অফিস, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কাম ডর’মেটরি নির্মাণ করা হবে। ১০০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন কোল্ড স্টোরেজ (চার চেম্বার বিশিষ্ট), প্যাকেজিং ফ্যাক্টরি ও ৩৬টি শুঁটকি বিক্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের আ’ওতায় ১০টি টয়লেট, তরল বর্জ্য শোধনাগার বা ইটিপি, ইনচার্জ অব ওয়াটার ট্রি’টমেন্ট প্ল্যান্ট (ডাব্লিউটিপি) নির্মাণ করা হবে।
প্র’কল্পের আওতায় চারজন কর্মকর্তার মূল বে’তন ধরা হয়েছে ৬৯ লাখ ১৬ হাজা’র টাকা এবং ৩ জন কর্মচা’রীরর মূল বেতন ধরা হয়েছে ১৫ লাখ ৭১ হাজার টাকা। এ’ছাড়া প্রকল্পের আওতায় একজনের মো’বাইল ভাতা ধরা হয়েছে ৯৭ হাজার ‘টাকা। একজনের মোটরযান র’ক্ষণাবেক্ষণ ভাতা ধরা হয়েছে ২১ লাখ টাকা। পে’ট্রোল ও লুব্রিকেন্ট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬ লা’খ টাকা। সাত জ’নের বা’ড়ি ভাড়া ভাতা ধরা হয়েছে ৩৮ ‘লাখ ১০ হাজার টাকা।
বিএ’ফডিসি সূত্র জানায়, মাছের অ’পচয় কমিয়ে শুঁটকি উৎপা’দন, সংরক্ষণ ও বাজা’রজাতকরণ ব্যবস্থা’পনার উন্নয়ন ক’রবে সরকার। শুঁক’টি উৎপাদন, প্র’ক্রিয়াজা’তকরণ, প্যাকেজিং ও বিপনে’র কাজে জড়িতদের জন্য নি’রাপদ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।
বিএ’ফডিসি সূত্র জানায়, সা’রা বছরই কক্সবাজারের মহালগু’লোতে শুঁটকি উৎ’পাদন করা হচ্ছে। শুঁ’টকি তৈরি এক’টি অতি প্রচলিত মাছ সং’রক্ষণ পদ্ধতি হলেও বর্তমানে অ’নেক ক্ষেত্রেই বাণি’জ্যিক শুঁটকি উৎপাদন ও সংর’ক্ষণ প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন প্রকার কৃ’ষিজ কীটনাশক ব্যবহার করা হ’চ্ছে। তাছাড়া শুঁটকি তৈরি’র সময় মাছ ভালো’ভাবে পরিষ্কার না করা, পরিবে’শ, আব’হাওয়া ও গুণ’গতমান রক্ষার অভাবে কাঙ্ক্ষিত মা’নসম্পন্ন শুঁটকি তৈরি স’ম্ভব হয়ে ওঠে না।
সি’ঙ্গাপুর, হংকং, মালয়েশিয়া, যুক্তরো’জ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আর’ব আমিরাতসহ বিভি’ন্ন দেশে বাংলা’দেশে উৎপাদিত শুঁ’টকি রফতানি হয়ে থাকে। অনু’মান করা হয়, সমুদ্র এ’লাকায় পচন ও পোকা-মা’কড়ের আক্রমণে ১০ থেকে ৩৫ শতাংশ শুঁট’কি নষ্ট হয়। শুঁট’কির গুণগতমান উন্নত ক’রার জন্য দেশি উপায়ে তৈরি গ্রিন হাউস মে’কানিক্যাল ড্রায়ার খু’বই উপ’যোগী।