ভাতার দাবিতে আল্টিমেটাম

ভাতা পাননি পিটিআইয়ে প্রশিক্ষণরত শিক্ষকরা

Spread the love

ভাতা পাননি পিটিআইয়ে প্রশিক্ষণরত শিক্ষকরা;

ভাতার দাবিতে  বিভিন্ন জেলায় মানববন্ধন ও স্মারক লিপি পেশ করেছেন ভুক্তভোগী  ডিপিএড প্রশিক্ষণরত শিক্ষকরা।

আজকের ঝলক নিজস্ব প্রতিনিধি : 

বাংলাদেশের ৬৭টি পিটিআইতে গত জানুয়ারী ২০২০ থেকে জুন ২০২১ খ্রী: ডিপিএড দেড় বছর মেয়াদী কোর্সে প্রায় ২১ হাজার শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণ গ্রহন করে আসছে ।

এই প্রশিক্ষণ করা বাবদ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রত্যেক শিক্ষকের জন্য মাসিক ৩হাজার টাকা করে ভাতা প্রদান করে থাকেন । করোনাকালীন সময়ে কোর্স সমাপ্ত হলেও শিক্ষকদের ভাতা দেওয়া হয়নি ঠিক মতো । কোনো পিটিআইতে ১৮ মাসের মধ্যে মাত্র ৩ মাসের ভাতা দেয়া হয়েছে । বরিশাল সাগরদী পিটিআইতে প্রশিক্ষনার্থীরা ৬ মাসের ভাতা পেয়েছেন । চলতি মাসে কোর্সটি শেষ হবে এখনো ১২ মাসের ভাতা পান নি শিক্ষকরা ।

https://www.youtube.com/watch?v=ie-elwJt3Zw ভিডিও

এই টাকার দাবীতে শিক্ষকরা ২৩ জুন সকাল ১১টায় বরিশাল টাউন হলের সামনে মানববন্ধন করেন । এ সময় শিক্ষকরা বলেন ‘‘আমাদের জনপ্রতি ৩৬ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হয়নি যা আমাদের প্রাপ্য । আমরা বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি আমাদের ভাতার টাকার বরাদ্দ আসলেও অর্থমন্ত্রনালয় থেকে এটা প্রদান করার ব্যপারে অনিহা প্রকাশ করেছেন যা অত্যান্ত দূঃখজনক ।

আমরা পরিস্কার ভাষায় বলতে চাই ‘‘ এটা কোনো প্রনোদনা বা অনুগ্রহ নয় এটা আমাদের প্রাপ্য, পাওনা ও অধিকার । আমরা আমাদের পাওনা বকেয়া ভাতা পরিশোধ করার জন্য অনুরোধ করছি । মহাপরিচালক, সচিব ও মন্ত্রী মহোদয়দের কাছে নিবেদন আপনারা আমাদের ভাতা পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিন ।

বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যখন করোনাকালীন বন্ধ ঘোষণা করা হয় তখন সকল বাঁধা অতিক্রম করেও ডিপিএড কোর্সটি চালু ছিলো । যার নির্দেশনা ২২জুন ২০২০ তারিখ নেপ থেকে প্রদত্ত । স্মারক নং ৩৮.৪১৮.০০.০০৪.২০১০.১১৬৫ সেই সূত্র ধরে অনলাইনে ক্লাস চলতে থাকে । সেই চিঠিতে স্পষ্ট নির্দশনা ছিলো অনলাইন ক্লাশের খরচ, ইন্টারনেট বিল প্রশিক্ষণ ভাতা থেকে বহন করা যাবে । সুতরাং ভাতা না দেওয়ার কোনো কারণ নেই ।

এছাড়া এদতসংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন গত ২৯ মার্চ জনপ্রশাসন থেকে জারি করা হয়েছে যেখানে ১২ নং পয়েন্টে স্পষ্ট লেখা আছে কোনো কোর্সের মেয়াদ, ক্লাস সেশনের সময় প্রচলিত পদ্ধতির ন্যায় অপরিবর্তিত থাকলে প্রশিক্ষনার্থীদের দৈনিক ভাতা অপরিবর্তিত থাকবে । এক্ষেত্রে মোবাইল ডাটা, কম্পিউটার  প্রিন্ট এবং অন্যান্য অনুষাঙ্গিক ব্যয় প্রশিক্ষণ ভাতা থেকে নির্বাহ করতে হবে । অন্যান্য ভাতা অপরিবর্তি থাকবে ।

আমরা অনলাইনে ক্লাস করতে গিয়ে এবং পিটিআই’র নির্ধারিত সকল  কাজ করতে গিয়ে আমাদের মাসিক বেতনের এক ‍তৃতীয়াংশ খরচ করে ফেলেছি । ঋণ করে  মোবাইল কিনে অনলাইন ক্লাশে যুক্ত হয়েছেন অনেক শিক্ষক । প্রতিমাসে ইন্টারনেট খরচ হয়েছে এক থেকে দেড় হাজার টাকা । বিভিন্ন উপকরণ, প্রিন্ট, ক্লাসে উপস্থান তৈরীতে কম্পিউটার খরচসহ বিভিন্ন খরচ হয়েছে মাসে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা । এছাড়া বোর্ড পরীক্ষায় অংশগ্রহন করার জন্য ফরম ফিলাব করতে জমা দিতে হয়েছে ২৭০০ টাকা এবং ঝুঁকি নিয়ে সরাসরি পরীক্ষা অংশগ্রহন করতে হয়েছে । এছাড়া বাসা ভাড়া বাবদ টাকা খরচ হয়েছে অনেক শিক্ষকের ।

বক্তরা আরো বলেন ‘‘ শিক্ষকদের পাওনা ভাড়া পাওয়ার জন্য রাস্তায় নামতে হলো এটা দূঃখজনক, অতিদ্রুত পারলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই সমস্যার সমাধান করে দিন । প্রধানমন্ত্রীর নিকট আকুল আবেদন আমাদের পাওনা টাকা পাওয়ার ব্যবস্থা করে করুন ।

বরিশাল টাউন হলের সম্মুখে মানববন্ধনে সভাপতি ছিলেন মো: ইকবাল হোসেন, সহকারী শিক্ষক মাধবপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ।বক্তব্য রাখেন সহকারী শিক্ষক গোলাম কিবরিয়া, আসাদুজ্জামান, মাহমুদ হোসাইন হাবিব, ইরানী খানম ।

 

 

এদিকে : 

করোনা মহামারির কারণে অনলাইনে ক্লাস করতে গিয়ে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করেও ভাতা পাচ্ছেন না ডিপ্লোমা-ইন-প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড) ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকরা। ৬ মাসের ভাতা না পাওয়ায় আর্থিক সংকটে পড়েছেন সিলেটের পিটিআইয়ে প্রশিক্ষণরত প্রাথমিকের হাজারো শিক্ষক। আসন্ন ঈদুল আজহার আগেই ভাতা-সংক্রান্ত সমস্যা দূর করতে সংশ্নিষ্টদের প্রতি পদক্ষেপ গ্রহণেরও দাবি জানিয়েছেন তারা। গতকাল মঙ্গলবার সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

লিখিত বক্তব্যে সিলেট পিটিআইয়ের ডিপিএড প্রশিক্ষণার্থী ও পিটিআই বাংলাদেশের সভাপতি আব্দুল মালিক মামুন জানান, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত সিলেট পিটিআইতে সশরীরে উপস্থিত থেকে তারা ডিপিএড ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ক্লাস করেছেন। ১৭ মার্চ থেকে করোনার কারণে প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় ২০২০ সালের ২১ এপ্রিল থেকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ‘ঘরে বসে ডিপিএড অনুশীলন কার্যক্রম’-এ অংশ নেন তারা। নির্দেশনা অনুযায়ী অনলাইনে ক্লাস করার জন্য প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক ডিভাইস (হাই পারফরম্যান্স ল্যাপটপ/অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল) কিনতে হয়েছে তাদের। সেই সঙ্গে অনলাইন ভিডিও ক্লাস করতে অধিক খরচে বাড়িতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ নিতে হয়েছে। এতে প্রচুর অর্থ খরচ হয়। অথচ ২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসের ভাতা তারা এখনও পাননি। এ অবস্থায় আর্থিক কষ্টে পড়েছেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডিপিএড ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের সিলেট পিটিআইয়ের প্রশিক্ষণরত রাসেল আহমদ, আবুল আজাদ, মোহাম্মদ জাহেদ ইকবাল, লিজা বেগম, বিনয় পণ্ডিত, নাহিদা সরকার, জয়ন্ত তালুকদার, তৃপ্তি বিশ্বাস, সৌরভ রায়, নাঈমা সরকার মিতু, ফৌজিয়া বেগম চৌধুরী প্রমুখ।

এদিকে আরো জানাগেছে, বাংলাদেশের প্রায় সকল পিটিআইতে ২টি করে শিফট চালু রয়েছে যেখানের প্রশিক্ষকগণ ৩০% অতিরিক্ত ভাতা পান । উক্ত পিটিআই’র প্রশিক্ষকগন করোনার ঝুঁকি নিয়ে কোর্সটি সঠিক সময়ে শেষ করলেও একই ভাবে তারাও ৩০% বকেয়া ভাতা এখনো পান নি।

আরো পড়ুন;

ডিপিএড সনদ জমা দিতে আগ্রহ নেই অনেক শিক্ষকের

ভিডিও দেখুন https://www.youtube.com/watch?v=ie-elwJt3Zw



আমাদের ফেসবুক পাতা




প্রয়োজনে কল করুন 01740665545

আমাদের ফেসবুক দলে যোগ দিন







Translate »