করোনাভাইরাসের মহা’মারীর মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্রে এবার নির্বাচনী প্র’চার-প্রচারণা ছিল নজিরবিহীন। অনলাইনে নি’র্বাচনী প্রচারণা ছিল ব্যাপক। ডিজি’টাল প্রচার প্রচারণার পাশাপাশি রা’জনীতির ৫০ বছরের কলাকৌশল কাজে লাগি’য়েছেন জো বাইডেন।
জনগণের মনের ভা’ষা বুঝতে পেরেছেন তিনি। যুক্তরা’ষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার উচ্চাকা’ঙ্ক্ষা ছিল তার। অবশেষে চে’ষ্টায় সফল হলেন তিনি। সাতটি কারণ’ জয়ে সাহায্য করেছে জো বাই’ডেনের।
১. কোভিড
করোনা’ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দুই লাখ ত্রিশ হা’জার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এতে মানু’ষের জীবনযাত্রা ও রাজনীতি বদলে গেছে। কারণ ডোনা’ল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় করো’নাভাইরাসের বিষয়ে উইসক’নসিনে নির্বাচনী র্যা’লিতে বলেছিলেন, ফেক নিউজে সব’কিছুই কোভিড, কোভিড, কোভিড, কোভিড।
এই মন্তব্য ট্রাম্পের জন’সমর্থন কিছুটা হলেও বিপক্ষে চলে যায়। অন্য’দিকে জো বাইডেন কোভিড ইস্যু’তে যে অবস্থান সেটি তাকে এগিয়ে নিয়েছিল গ’ত মাসের এক জনমত জরিপ এমনটি প্র’কাশ হয়। এই জরিপে ট্রাম্পের তুল’নায় জো বাইডেন ১৭ পয়েন্ট এগিয়ে ছিলেন।
২. অ’র্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি
ডোনা’ল্ড ট্রাম্প যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বা’চিত হন তখন থেকে দেশটির অ’র্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সমৃ’দ্ধির দিকে নজর রেখেছিল। কিন্তু ক’রোনা মহামারীর কারণে সেই অর্থনৈ’তিক প্রবৃদ্ধিতে ধস নেমে’ছে। অর্থনৈতিক এই ক্ষ’তি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারণা কৌশলকে বাধাগ্রস্ত করেছে। অন্য’দিকে জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের অ’র্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বিষয়টি তু’লে ধরতে পারলে জনমত তার দিকে সমর্থন জানায়। গ্রীষ্ম’কালে করা আর এক জরিপে দেখা গি’য়েছিল, ডোনাল্ড ট্রাম্পের রেটিং ৩৮ শ’তাংশ কমে গিয়েছিল।
৩. নির্বা’চনী প্রচারণার কৌশল
যুক্তরাষ্ট্রে’র নির্বাচনের শুরু থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বা’চনী প্রচারণার তুলনায় জো বাই’ডেনের নির্বাচনী কৌ’শল ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। ট্রাম্প যখন নি’র্বাচনী প্রচারণায় বিতর্কমূলক ব’ক্তব্য দিতেন তখন জো বাইডেন ট্রা’ম্পের বক্তব্যের বিপরী’তে জনগণকে ধৈর্য্য ধারণ করতে বলেছেন।
৪. যুক্ত’রাষ্ট্রের নির্বাচনে জো বা’ইডেনের হিসাব কষে এ’গোনো
জো বাইডেনের ৫০ ব’ছরের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে হিসাব ক’ষে এগোনোর চেষ্টা করে’ছেন। কিন্তু সেই হিসা’বেও মাঝে মাঝে গণ্ডগোলের সৃষ্টি করেছে। তার দী’র্ঘদিনের রাজনীতিতে ভুল বক্ত’ব্য ও অসমীচীন কাজে’র জন্য বিশেষ পরিচি’তি পেয়েছিলেন। যেসব ভুল তাকে প্রায়শই বিপ’দগ্রস্ত করেছে। ১৯৮৭ সালের নির্বা’চনে এমন ভুল তার হারের কা’রণ ছিল।
২০০৭ সালে আবার যখন তি’নি নির্বাচনে দাঁড়িয়ে’ছিলেন সেবার তার তেমন এ’টা সম্ভাবনাই ছিল না। কিন্তু তৃ’তীয়বার যখন ওভাল অফিসের জন্য লড়েছেন তখ’ন তিনি বক্তব্য দে’বার সময় যথেষ্ট কম হোঁচট খেয়ে’ছেন। এর একটি বড় কা’রণ হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজে তার লাগামহীন অসামঞ্জস্যপূর্ণ নানা বক্ত’ব্যের কারণে নিয়মিত খবরের উৎস ছিলেন। বাই’ডেন ক্যাম্প বরং ট্রাম্পকে তার মুখ খোলার সু’যোগ দিয়েছে যা শেষ প’র্যন্ত কাজে লেগেছে।
৫. যুক্তরাষ্ট্রে আ’র যেই হোক ট্রাম্প নয়
জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রে’সিডেন্ট হওয়ার কৌশলে একটি স্লোগান কাজে লে’গেছিল ‘আর যেই হোক ট্রাম্প নয়’। নি’র্বাচনের এক সপ্তাহ আগে জো বা’ইডেন ক্যাম্প তাদের সর্বশেষ টেলিভিশন বি’জ্ঞাপন প্রচার করে। এক বছর জো বা’ইডেন প্রার্থী হিসেবে যখন মনোনীত হন এবং যে’দিন তার প্রচারণা শুরু করেন সে সম’য়কার বক্তব্যের সাথে এই বিজ্ঞাপনের ব’ক্তব্যে বেশ লক্ষণীয় সাদৃশ্য ছিল। কৌশল ছিল বা’ইডেনের প্রচারণায়। জো বা’ইডেন ডোনাল্ড ট্রাম্প নন, এমন বা’র্তা দেয়া হয়েছে ভো’টারদের।
৬. মধ্যপন্থী অবস্থান
প্রার্থী হিসেবে ম’নোনীত হবার লড়াইয়ে জো বাইডেনের মূল প্র’তিদ্বন্দ্বী ছিলেন বার্নি স্যান্ডার্স, যিনি বামপন্থী হি’সেবে পরিচিত। আর একজন ছি’লেন এলিজাবেথ ওয়ারেন। যার ক্যাম্পেইনে বে’শ ভালো অর্থের যোগান ছিল। এই দু’জনের যেকোনো সভায় রক গানের কনসার্টের মতো মা’নুষ জড়ো হতো। কিন্তু জো বা’ইডেন উদারপন্থীদের চাপের মুখে’ও মধ্যপন্থী অবস্থান ব’জার রেখেছেন। তিনি সরকারি স্বা’স্থ্য সেবা ব্যবস্থা, বিনামূল্যে ক’লেজ শিক্ষা ও ধনীদের জন্য বে’শি কর আরোপ করার নী’তিগুলোতে সমর্থন দেননি। এ’ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি নি’য়ে জো বাইডেন আলোচনা ক’রেছেন। জলবায়ু ইস্যু দি’য়ে তরুণ প্রজন্মকে আ’কর্ষণ করেছেন।
৭. বেশি অর্থ, কম সমস্যা
যেকোনো নি’র্বাচনে অর্থ একটি গুরুত্বপূর্ণ। অ’র্থ ছাড়া নির্বাচনে নামা যেন অনর্থক। কিন্তু অ’র্থের সঙ্গে থাকতে হবে কৌশল। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বা’চনের শুরুতে জো বাইডে’নের প্রচারণা তহবিল প্রায় শূন্য ছিল। ট্রাম্পের বিপ’ক্ষে তার সীমাবদ্ধতা ছিল এটি। ট্রাম্পের প্রচারণা ছিল শত কো’টি ডলারের বিষয়। কিন্তু এ’প্রিল মাসে এসে তহবিল গঠনে জোরা’লোভাবে লেগে পড়ে বাইডেন ক্যাম্প। অন্যদিকে ট্রাম্পের প’দ্ধতি হচ্ছে বাড়াবাড়ি অপচয়। নি’র্বাচনী প্রচারণার শেষের দিকে এ’সে ট্রাম্প ক্যাম্পের চেয়ে বড় তহবিল গড়েছিলেন বাইডেন। অ”ক্টোবর মাসে ট্রাম্পের চেয়ে ১৪৪ মি’লিয়ন ডলার বেশি ছিল বাই’নের তহবিলে। যা ব্যবহার করে টেলি’ভিশন বিজ্ঞাপনে রিপাবলিকা’নদের জর্জরিত করে ফে’লা হয়।
সূত্র: বিবিসি।