আজকের ঝলক নিউজ

কলাপাড়ায় পল্লী বিদুতের লাইন দেয়ার নামে গ্রামে গ্রামে গড়ে উঠছে চাঁদাবাজদের সংগঠন।

Spread the love

কলাপাড়ায় গ্রামীণ জনপদে পল্লী বিদ্যুত সমিতির নতুন বিদ্যুত সংযোগ দেয়ার নামে একটি দালাল চক্র চাঁদাবাজি করে আসছে। গড়ে উঠেছে বড় ধরনের একটি সিন্ডিকেট চক্র। এমন কোন গ্রাম-পাড়া-মহল্লা নেই যেখানে চাঁদাবাজির ঘটনা না ঘটেছে। ধুলাস্বর ইউনিয়নে একটি চাঁদাবাজি চক্রের নৈরাজ্য তো চরমে পৌছেছে। অপরদিকে লালুয়া ইউনিয়নের চান্দুপাড়ায় এক মেম্বারসহ একটি চক্র নতুন সংযোগ দেয়ার কথা বলে করছে ব্যাপক চাঁদাবাজি। খাম্বা টানা থেকে শুরু করে খাম্বা পোতা, লাইন টানা, তার দিয়ে ঘরের ওয়ারিং ও নতুন সংযোগ পর্যন্ত দিতে গ্রামে গ্রামে চাঁদাবাজদের সংগঠন গড়ে উঠেছে। এসব কারণে সরকারের বিদ্যুতায়নের সুফলের বদলে নিতে হচ্ছে দুর্নাম। এসব অনৈতিক কর্মকান্ড প্রতিরোধে স্থানীয় পল্লী বিদ্যুত সমিতি একেবারেই উদাসীন। এসবের সঙ্গে এক শ্রেণির গ্রাম্য ক্যাডার থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা জড়িয়ে এহেন অপকর্ম করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। গ্রামের মধ্যে ডিজাইন মাফিক লাইন টানা হয়নি। নির্দিষ্ট দূরত্ব না মেনে বিদ্যুতের খাম্বা পোতার অভিযোগ রয়েছে। আরেকদিকে চাকামইয়া ইউনিয়নে চুঙ্গাপাশা গ্রামে সম্প্রতি লোকজন দালালদের কাছে দেয়া টাকা ফেরত পেতে বিদ্যুতের পোল বসানোর ঠিকাদারের শ্রমিকদের আটকে রাখার ঘটনাও ঘটে। এক কথায় পল্লী বিদ্যুতের চরম স্বেচ্ছাচারিতা চলছে নতুন বিদ্যুত সংযোগ টানার ক্ষেত্রে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বালিয়াতলী ইউনিয়নের আমতলী পাড়ার মাহতাবউদ্দিন মাতুব্বর এখন জীবন শঙ্কার ভয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মামলা করেছেন প্রতিকারের আশায়। ফলন্ত ১২টি তাল গাছ ঘেঁষে বিদুতের মূল লাইন টানা হয়েছে। তারের সমস্যার অজুহাতে গাছগুলোর ডাল-পাতা আগা পর্যন্ত মুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তাল গাছগুলো বেচে থাকবে কি না তা অনিশ্চিত তার একটু সরানোর জন্য অনেক আকুতি জানিয়েছিলো শোনেনি কেউ । মাহতাব উদ্দিন বলেন, মাননীয় প্রধানমমন্ত্রী বজ্রপাত প্রতিরোধে তাল গাছ লাগানোর জন্য সবাইকে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু তারা তালগাছগুলো মেরে ফেলছেন। এসব নিয়ে এলাকার আব্দুল হাই মাদবরের নেতৃত্বে মাহতাব উদ্দিনের ওপর ১৮ সেপ্টেম্বর হামলা চালিয়ে তালগাছের ডাল-পালা কাটতে বাধা দিলে মাহতাব উদ্দিনকে মারধর করা হয়েছে। কলাপাড়া পল্লী বিদ্যুত সমিতির জোনাল অফিসে বিদ্যুত লাইনের তার গাছ থেকে দুরে রাখার আবেদন করেছেন। কিন্তু কোন প্রতিকার করা হয়নি। প্রতিকারের মামলা করেছেন মাহতাব উদ্দিন। তিনি বলেন, তাল গাছের রস দিয়ে গুড় তৈরি করে তিনি বাজারে বিক্রি করে সংসারের যোগান দিচ্ছেন। কিন্তু এ উপার্জন বন্ধের উপক্রম হয়েছে। অপরদিকে আমিরাবাদ গ্রামের কৃষক তোফাজ্জেল হাওলাদার বিদ্যুতের খাম্বা আসার সময় দুই হাজার টাকা, খাম্বা বসানোর সময় এক হাজার এবং তার টানার জন্য আরও এক হাজার টাকা দিয়েছেন। একই এলাকার মো: আবুল কালাম মৃধার কাছ থেকে এ টাকা নিয়েছেন। বিদ্যুত লাইনের তার তোফাজ্জেল হাওলাদারের ঘরের ওপর দিয়ে নিয়ে গেলে বাধা দেয়ায় মারধর করলে মামলা করেছেন। তোফাজ্জেলের এখন রাত কাটে আতঙ্কে । উল্টো এখন তিনি পাল্টা মামলার আসামি হয়েছেন। পল্লী বিদ্যুতের এহেন অনৈতিক কর্মকান্ডে তোফাজ্জেল হাওলাদারের এখন করুন অবস্থা।
এবিষয়ে অভিযুক্ত একজন কালাম মৃধাকে ফোন করলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, বিদ্যুতের ঠিকাদারের লোকজন আসলে তাদের খাওয়া-খরচ বাবদ কিছু টাকা সবাই মিলে খরচ করে যা সবাই বহন করেছে কিন্তু ৩৫ শ টাকা নেওয়ার কথা সঠিক নয়।

কলাপাড়া পল্লী বিদ্যুত সমিতির ডিজিএম প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম বলেন, কাউকে কোন ধরনের টাকা-পয়সা না দেয়ার জন্য পল্লী বিদ্যুতের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করানো হয়েছে।

Exit mobile version