বিএনপির এখন কী করা উচিত !!
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলো সারাদেশে সহিংসতা ও চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টির যুব সংগঠন জাতীয় যুবশক্তি।
সংগঠনটির আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম বলেছেন, “বিএনপিকে সারা বাংলাদেশে তাদের সহিংসতা বন্ধ করতে হবে, তা না হলে আওয়ামী লীগের মতই বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনগুলোকে পরিণতি ভোগ করতে হবে।”
শনিবার বিকালে ঢাকার বাংলামোটরে রূপায়ণ ট্রেড সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। পুরান ঢাকায় ব্যবসায়ী সোহাগকে মাথা থেঁতলে হত্যার বিচারের দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
তারিকুল বলেন, “এ ঘটনা বিএনপি ও তার অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোর প্রত্যক্ষ সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও দখলবাজির ধারাবাহিকতার অংশ; যার কারণে ৫ অগাস্টের পর থেকে গত ১১ মাসে শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। রাজধানী থেকে মফস্বল পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড জুলাই আন্দোলনের স্পিরিট, গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার চেতনাকে অবমাননা করেছে।
“যারা একদিকে গণতন্ত্রের পক্ষে স্বৈরাচার হটানোর আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিল, আজ তাদেরই হাতে মানুষকে প্রাণ দিতে হচ্ছে।”
২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপির শাসনামলে ‘ছাত্রদল ও যুবদলকে ব্যবহার করে দখল, দমনের রাজনীতি চালানো হয়েছিল’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তারই এক সম্প্রসারণ আজও বয়ে চলেছে। জনমনে উদ্বেগ আতঙ্কের পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে, এর পরিণতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?
“এ অন্যায়ের যদি বিচার প্রতিষ্ঠা করা না যায়, তাহলে বিচার বিভাগে পুরনো রাজনৈতিক সংস্কৃতি বারবার ফিরে আসবে। যা জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত।
যুবশক্তির আহ্বায়ক বলেন, “জনমনে গভীর আশঙ্কা জন্মেছে, যদি এখনই এ সহিংসতার লাগাম টানা না যায়- তাহলে আসন্ন নির্বাচনের আগের পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে যাচ্ছে বলে আমরা মনে করছি। এমন অবস্থায় নির্বাচনও শান্তিপূর্ণভাবে হবে কি না, সে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।”
লিখিত বক্তব্য শেষে তারিকুল ইসলাম বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যখন বাংলাদেশের ইতিহাসে সেরা নির্বাচন আয়োজন করতে যাচ্ছেন, তখন আমরা বারবার প্রশ্ন করেছি- আপনি কীভাবে মনে করেন বর্তমান বাংলাদেশের নির্বাচন দেওয়ার মত একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়েছে?
“আগে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ যেসব জায়গায় চাদাবাজিঁ করতো, সেসব জায়গায় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা এখন চাঁদাবাজি করছে।”
তিনি বলেন, “চাঁদাবাজি বিএনপির নেতাকর্মীদের আয়ের একমাত্র উৎস।”
তারিকুল বলেন, “বিএনপি সারা বাংলাদেশের মধ্যে বিএনপি যে ধরনের সহিংস কর্মকাণ্ডে লিপ্ত আছে, এ পরিস্থিতিতে কখনোই আমরা নির্বাচনের প্রত্যাশা করতে পারি না।”
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আপনাদের কাছে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, জনগণ আপনাদের ক্ষমতা দিয়েছে। বিএনপির কাছে সারেন্ডার করার জন্য কি আপনাদের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে?
“আপনারা লন্ডনে গিয়ে বিএনপির কাছে স্যারেন্ডার করে এসেছেন। আপনাদের কর্তৃত্ব এখন কোন জায়গায়, সেটি জনমনে একটি প্রশ্ন।”
গত বুধবার বিকালে মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের সামনে প্রকাশ্যে কংক্রিট বোল্ডার দিয়ে শরীর ও মাথা থেঁতলে হত্যা করা হয় ভাঙারি ও পুরনো তারের ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার তুমুল সমালোচনার সৃষ্টি হয়। সেদিন রাত পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছে মোট পাঁচজন।
এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর বিএনপির তিন অঙ্গ সংগঠনের পাঁচজনকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের ভাষ্য, “ভাঙারি ব্যবসাকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব এবং পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটে।”
বিএনপির জনপ্রিয়তা ব্যাপক, দলে রয়েছে অনেক ভালো নেতা কর্মী তাদের মনে একটাই প্রশ্ন বিএনপির এখন কি করা উচিত !!
https://www.youtube.com/watch?v=kmcBhMz6MWc