জেলেদের কথা

মাছ ধরা নিষিদ্ধ এমন এলাকা সমূহ ও নিয়মনীতি; মোঃ জহিরুল ইসলাম

ডিসেম্বর ২২ ২০২০, ২২:৩০

Spread the love

আজকের ঝলক

মাছ ধরা নিষিদ্ধ এমন এলাকা সমূহ ও নিয়মনীতি

জেন্ডার ও উপকূলীয় মাৎস্য বিশেষজ্ঞ

ইলিশ মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য মৎস সুরক্ষা এবং সংরক্ষণ নীতিমালা ১৯৮৫ এর সংশোধনী আকারে ২০০৫ সালে চারটি গুরিত্বপূর্ণ জাটকা নার্সারী অভয়ারণ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০১১ সালে ইলিশ সুরক্ষা এবং সংরক্ষণ নীতিমালায় আরেকটি সংশোধনীর মাধ্যমে আরও একটি অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়। মা ইলিশ যাতে নির্বিঘেœ ডিম ছাড়তে পারে তাই প্রতি বছর অক্টোবর মাসে ১১ দিন (পরবর্তীকালে ২০১৬ সালে ত বাড়িয়ে ২২ দিন করা হয়েছে)
সব ধরণের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়। মৎস সুরক্ষা এবং সংরক্ষণ নীতিমালা ১৯৮৫ এর সংশোধনীতে বলা হয়েছে যে, মাছ ধরা নিষিদ্ধ কালীন সময়ে অভয়ারণ্য কিংবা ডিম ছাড়ার এলাকা সমূহের কোথাও যদি কোন প্রকারের মাছ ধরা হয় তাহলে দোষীদের আটক করা হবে এবং মালামাল জব্দ করা হবে।

মাছ ধরার সরঞ্জামাদির উপরে নিষেধাজ্ঞা
১৯৮৮ সালে এক ধরণের বিশেষ জাল যার ছিদ্র ৪.৫ সেঃমিঃ এর চেয়ে ছোট তা নিষিদ্ধ করা হয়। ক্ষুদ্র পরিসরে ইলিশের এলাকায় ১০ সেঃমিঃ এর ছোট ছিদ্র সম্বলিত জাল ব্যবহার আইন করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ১৯৫০ সালের মৎস আইন যা ২০০২ সালে সংশোধিত হয়েছে সেখানে ¯পষ্ট করে বলা হয়েছে “ কোন ব্যক্তিই কারেন্ট জাল উৎপাদন, বুনন, আমদানি, মজুদ, বহন, পরিবহন, ক্রয় কিংবা ব্যবহার করতে পারবে না “। এই আইন ভাঙ্গার শাস্তি হল জেল এবং জরিমানা। সরকার মৎস অফিসারকে সাব-ইন্সপেক্টর (উপ পরিদর্শক) হিসেবে পদান্নতি দিয়েছে।

মাছ ধরার মৌসুমের/সময়ের উপর নিষেধাজ্ঞা
মৎস সুরক্ষা এবং সংরক্ষণ আইন ১৯৫০ এ প্রতি বছর নভেম্বর থেকে এপ্রিল মাসের মধ্যকার সময়ে জাটকা মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জাটকা বলতে ২৩ সেঃমিঃ এর চেয়ে ছোট (যা পরিবর্তন করে ২৫ সেঃমিঃ করা হয়েছে) ইলিশ মাছ বোঝানো হয়েছে। এক সংশোধনীর মাধ্যমে জাটকা ধরার নিষেধাজ্ঞার সময় বাড়িয়ে নভেম্বর থেকে মে করা হয়েছে এবং ২০১৩ সালে তা জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। জাটকার আকারে ভিন্নতা এবং নিষেধাজ্ঞার সময় বৃদ্ধিতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে যে, এই বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নির্ভরযোগ্য তথ্যের ঘাটতি রয়েছে এবং এ বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন। মার্চ এবং এপ্রিলের সময়টাতে চারটি অভয়ারণ্যে এবং নভেম্বর থেকে জানুয়ারী মাসের মধ্যে একটি অভয়ারণ্যে ইলিশ সহ যেকোন ধরণের মাছ ধরা নিষিদ্ধ।

বাংলাদেশে ৬০-৭০% ইলিশ মূলত প্রজনন মৌসুমে আহরণ করা হয় যার প্রায় ৭০% প্রজননের জন্য উপযোগী। ইলিশের ডিম ছাড়ার সময়কে অবাধ করার লক্ষ্যে দেশের সকল ডিম ছাড়ার স্থানগুলোতে অক্টোবর মাসের ভরা পূর্ণিমার সময়ে ১১ দিন যেকোন ধরণের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মৎস সুরক্ষা এবং সংরক্ষণ আইন ১৯৮৫ এর এক সংশোধনীর মাধ্যমে ২০১১ সালে এই বিধান করা হয়। যদিও মাছ ধরা নিষিদ্ধকালীন সময় এবং স্থায়ীত্ব সব সময় উপরের নিয়ম মেনে নির্ধারণ করা হয় না। উধাহরণ স্বরূপ, ২০১৪ সালে ১ থেকে ১৫ অক্টোবর এই সময়টাতে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। একজন উপজেলা মৎস অফিসার প্রতক্ষ্য করেছেন যে ভোলা জেলার মনপুরা এলাকায় ৫ অক্টোবরের নিষেধাজ্ঞার সময় শুরু হবার পূর্বেই ২০ সেপ্টেম্বরে ইলিশের ডিম ছাড়া শুরু হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সময় দেরিতে শুরু হবার কারণে ডিমওয়ালা ইলিশ মাছ ডিম ছাড়ার পূর্বেই ধৃত হতে পারে। তদুপরি, জেলেদের দুর্ভোগ লাঘব এবং যথাযথ ফলাফলের জন্য নিষেধাজ্ঞার সময় নির্ধারণের ক্ষেত্রে অনুমান নির্ভর না থেকে যথাযথ গবেষণার প্রয়োজন।



আমাদের ফেসবুক পাতা




প্রয়োজনে কল করুন 01740665545

আমাদের ফেসবুক দলে যোগ দিন







Translate »