জেলেদের যতো সমস্যা সমাধানে প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ

ডিসেম্বর ২২ ২০২০, ২২:২৩

Spread the love

আজকের ঝলক

জেলে সমাজের সমন্বিত মূল সমস্যা সমূহ; অসন্তেষজনক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি

মোঃ জহিরুল ইসলাম

গবেষক মৎস্যজীবীদের জীবিকায়ন

নিচের অনুচ্ছেদগুলো বিভিন্ন জরিপে প্রাপ্ত মূল বিষয়বস্তু এবং বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে বিরাজমান অবস্থার একটি সমন্বিত বর্ণনা প্রদান করে। অনুচ্ছেদগুলো উপক’লীয় এলাকায় বসবাসকারী জেলেদের সমাজের নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু নিয়ে আলোকপাত করার পূর্বে তাদের জীবিকা সংক্রান্ত সাধারণ বিষয়গুলোর দিকে দৃষ্টিপাত করেছে।

মাছের উৎপাদন/ আহরণ হ্রাস
১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সালের মাঝের সময়টাতে মোহনাগুলোতে মাছ আহরণের হার উলেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পেয়েছিল। এর পরের সময়গুলোতে বিশেষ করে উপক’লীয় এলাকায় মাছের উৎপাদন ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। যাহোক, এটি বলে রাখা দরকার যে, একই রকম না এবং কোন কোন বছর অন্যগুলোর তুলনায় ভাল যায়। মাছের উৎপাদন হ্রাসের মাত্রা মূলত উপক’লীয় এলাকাগুলোতে খুব প্রখর। প্রাকৃতিক এই অভিঘাত (নদীর বুকে পলি জমা, নদীগুলোতে জোয়ারের প্রবাহ এবং গভিরতা হ্রাস, নদীর গতিপথ পরিবর্তন) এবং অতিরিক্ত মাছ শিকারের মাধ্যমে মাছের প্রজনন এবং বিচরণ ক্ষেত্র ধ্বংস এর সাথে সংশিষ্ট জনগোষ্ঠীর জীবিকায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে।
মাছের উৎপাদন হ্রাস পাবার পেছনের কারণগুলোর মধ্যে প্রধান হলঃ
ক্স অতিরিক্ত মাছ শিকার, বর্ধিত সংখ্যক নৌকা, অধিকতর ফলপ্রসূ/ধ্বংসাতœক সরঞ্জাম ব্যবহার
ক্স নদীতে কৃষিজাত রাসায়নিক বর্জ্য, সার, শিল্প কারখানার বর্জ্য, নৌকা থেকে তেল নিঃসরণ ইত্যাদি
ক্স জেলেদের মতে প্রাকৃতিক পরিবেশে পরিবর্তন (যেমন- নদীগর্ভে পরিবর্তন, নদীতে পলি জমা, উপক’লীয় এলাকায় সরকার কর্তৃক সমবর্তন ইত্যাদি)

৮. অসন্তেষজনক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি

উপক’লীয় এলাকার বর্তমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে জেলে সমাজে এবং বাজারে ক্রমবর্ধমাণ সহিংস পরিস্থিতির নিরিখে বর্ণনা করা যায়। নিুের বিষয়গুলোতে এটি প্রতিফলিতঃ
ক্স নদী এবং সাগরে ডাকাতির পরিমাণ বেড়েই চলেছে যার ফলে জেলেদের মাছ এবং সরঞ্জামাদি বিনষ্ট হচ্ছে; আহত এমনকি মৃত্যুর ঘটনাও খুব স্বাভাবিক বিষয় হয়ে পড়েছে।
ক্স জেলেদের নৌকা থেকে চাঁদাবাজি এবং আড়ত থেকে মাছ নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে অধিকাংশ বাজারেই।

ঋণ প্রাপ্তির সুযোগের অভাব
বিভিন্ন এনজিও যেমন আশা, ব্রাক, গ্রামীন ব্যাংক, কোষ্টটাষ্ট সাধারনত ঋন দিয়ে থাকে কিস্তু ব্যাংক লোন পাবার সুযোগ না থাকায় জেলেদের অপ্রাতিষ্ঠানিক লোনের (দাদন, উচ্চ সুদে ঋণ) উপরে নির্ভর করতে হয়। জেলে সমাজে ক্ষুদ্র ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চলমান থাকলেও এনজিওদের প্রদত্ত ঋণের সর্বোচ্চ সীমা জেলেদের চাহিদার তুলনায় অনেক কম। এর ফলে বর্তমানে প্রচলিত ক্ষুদ্র ঋণ কাঠামো উপক’লীয় এলাকার জন্য খুব একটা কার্যকর নয়। যার ফলে জেলেরা স্থানীয়ভাবে সহজলভ্য কিন্তু উচ্চ হারে সুদ সম্বলিত ঋণের উপর নির্ভরশীল হতে বাধ্য হয়।

সুশাসন সংশিষ্ট সমস্যা সমূহঃ
জেলে সমাজ এবং অন্যান্য অংশীদারদের অনেকেই অভিযোগ করেন যে, উদ্ভ’ত সমস্যার অনেক কিছুর পেছনেই দুর্বল সুশাসন দায়ী। স্থানীয় সরকার স¤পর্কিত অপর্যাপ্ত নীতি এবং স্বায়ত্তশাসনের অভাবে এখানে স্থানীয় সরকারের অবস্থা বেশ নাজুক। এখানে মাছ চাষ, কৃষি, স্বাস্থ্য এবং শিক্ষার মত প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলোতে সরকারী সেবা পর্যাপ্ত নয়। এখানে দরিদ্রতার দিকে কম দৃষ্টি এবং অপর্যাপ্ত বাস্তবায়নের মাধ্যমেই সরকারের নীতিমালা স¤পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। জাতীয় পর্যায়ে উপক’লীয় এলাকা থেকে খুব কম প্রতিনিধিত্ব প্রত্যক্ষ করা যায়। জেলে পাড়াগুলো প্রায়শই জমি এবং বিভিন্ন সামাজিক সেবা যেমন-স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা ইত্যাদিতে সমান অধিকার পায় না। রাজনীতিতে তাদের প্রতিনিধিত্ব খুবই কম। তাদের এলাকা সমূহে রাস্তা-ঘাট, বাজার এবং অন্যান্য অবকাঠামোও তেমন গড়ে ওঠে না। এই বিষয়গুলো জেলে পাড়াগুলোকে উন্নয়ন প্রক্রিয়া থেকে দূরে সরিয়ে রাখে যা জাতীয় অর্থনীতিতে তাদের অবদানকে কমিয়ে দেয়।

উলক’লীয় এলাকায় ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগের আঘাত
জরিপকৃত অধিকাংশ এলাকাতে ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। ভোলা জেলা এবং এর উপজেলাসমূহ সহ প্রায় সমগ্র উলক’লীয় অঞ্চল ঝড়, ঘূর্নীঝড় এবং এর সাথে উঁচু জোয়ারের পানি ইত্যাদি দুর্যোগের কাছে জিম্মি যা প্রতি বছরেই জেলেদের নৌকা এবং মাছ ধরার সরঞ্জামাদি সহ আর্থিক এবং স¤পদের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি সাধন করে। প্রতি বছর ঘূর্ণীঝড়ে অনেক জেলে তাদের জীবন হারায়, কারণ তারা নির্ধারিত সময়েই পূর্বে সাগর থেকে উপক’লে ফেরত আসতে পারে না। হতাহতের কিংবা নিখোঁজের এসব ঘটনা বেশির ভাগ সময়েই মানুষের অজানা থেকে যায়। বিশেষ করে নদী তীরের এলাকাগুলোতে নদী ভাঙ্গন এই অবস্থাকে আরও ভয়াবহ করে তোলে এবং এক স্থান থেকে অন্যত্র স্থানান্তরীত হবার মত সামাজিক ঘটনাকে বৃদ্ধি করে, কারণ বেশিরভাগ জেলেই নদীর পাড়ে, কিংবা বাঁধের উপর এবং বাঁধের ঢালে বসবাস করে যা মূলত সরকারী জায়গা।

বিকল্প আয় বর্ধক কাজের অভাব
ভোলা জেলার উপজেলাগুলো থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক উপক’লীয় মানুষ দেশের বড় শহরগুলোতে পাড়ি জমায়। এটি মূলত উপক’লীয় এলাকার কাজ ও সেবার অপ্রতুলতার সাথে স¤পৃক্ত বিশেষত যখন ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে এবং জেলেরা মাছ ধরার জন্য ঋণ পেতে ব্যর্থ হয়। অমৌসুম এবং মাছ ধরা নিষিদ্ধ কালীন সময়ে জেলেরা নিদারুণভাবে বিকল্প কর্মসংস্থানের খোঁজ করে কারণ বেশির ভাগ জেলেই দিন আনে দিন খায় এবং এমনকি নিষিদ্ধ কালীন সময়ে আগামী দিনের খরচ মেটানোর জন্য তাদের কোন

সঞ্চয় থাকে না। অমৌসুমে তাই পরিবারের জীবিকার প্রয়োজন মেটানোর জন্য জেলেদের বিকল্প আয় বর্ধক কাজের প্রয়োজন হয়। যদিও, অধিকাংশ জেলেদেরই মাছ ধরা ছাড়া অন্য কোন অর্থনৈতিক কাজে খুবই সীমিত দক্ষতা রয়েছে। যার ফলে তারা বড় শহরগুলোতে স্থানান্তরিত হয়ে রিক্সা চালায় কিংবা দিন-মজুরের কাজ করে।

সামাজিক প্রতিষ্ঠানের অভাব
নিজেদের অধিকার রক্ষার জন্য জেলে সমাজের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা এবং রাজনৈতিক ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন এবং তাদের জীবিকার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে কি ধরণের হুমকি আসতে পারে সেগুলো অনুমান করতে পারা প্রয়োজন। এনজিও কর্তৃক সমাজ ভিত্তিক অনেক সংগঠন পরিচালনা করলেও উপক’লীয় এলাকায় সামাজিক প্রতিষ্ঠানের এখনও যথেষ্ট অভাব রয়েছে। দেখা গেছে যে, জেলে পাড়াগুলো অপ্রাতিষ্ঠানিক ঋণ প্রাপ্তি এবং মাছ ধরার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নিজেরা অনেক বেশি সংঘবদ্ধ, যদিও সমাজে তাদের অধিকার, ন্যায় বিচার প্রাপ্তি ইত্যাদিও ক্ষেত্রে তারা তাদের দাবি উত্থাপন করতে পারে না। যদিও জেলা পর্যায়ের জেলেদের সংগঠনে তাদের প্রতিনিধি রয়েছে কিন্তু সেসব সংগঠনের কার্যক্রম শুধু মাত্র বৃহত্তর পরিসর অর্থাৎ জেলে, আড়ৎদার এবং মহাজনদের অধিকার এবং ন্যায় বিচার দাবির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এবং সাধারণত জেলা পর্যায়ের এসব প্রতিষ্ঠান মহাজন কিংবা আড়ৎদারদের কাছের লোকদের দ্বারাই পরিচালিত হয়। সেখানে জেলেদের প্রতিনিধিত্ব থাকতে পারে কিন্তু ক্ষুদ্র জেলে গোষ্ঠী থেকে কোন প্রতিনিধি থাকে না। বলাই বাহুল্য, জেলা পর্যায়ের ওইসব সংগঠন ক্ষুদ্র জেলে গোষ্ঠীর অধিকার এবং ন্যায় ন্যায় বিচারের বিষয়গুলোকে যথাযথভাবে চিহ্নিত করতে পারবে এবং নীতি নির্ধারকদের মনোযোগ আকর্ষন করতে পারবে এমনটা কারোরই আশা করা উচিৎ না। এসব কারণে তারা সরকার, এনজিও এবং দাতা সংস্থাসমূহের মত ক্ষেত্রগুলোর কাছ থেকে সহায়তা পায় না যা তাদেরকে তাদের দুরবস্থা থেকে রক্ষা করতে পারে এবং নিজেদের অধিকার আদায় এবং সেবা প্রাপ্তিতে সাহায্য করতে পারে।

অবকাঠামোর অভাব
ইতোবধ্যেই আলোচনা করা হয়েছে যে, অধিকাংশ জেলে পরিবারই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধের উপরে কিংবা নদীর তীরে দল বেঁধে বাস করে যেহেতু তাদের বাড়ি করার জন্য নিজস্ব কোন জমি নেই। ১৯৯০ এর দশকে পরিবহন, বিদ্যুৎ সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে উন্নয়ন হলেও তার সবই বাজার কিংবা মাছের আড়ত কেন্দ্রিক। কিন্তু পার্শবর্তী অন্যান্য জেলার মত ভোলা জেলারও অধিকাংশ জেলে পাড়া অবকাঠামো এবং যোগাযোগের কেন্দ্রস্থল থেকে অনেক

দূরে অবস্থিত। এর অর্থ হল, তারা রাস্তা, বাজার কিংবা অন্যান্য অবকাঠামোর সেবা খুব কম ভোগ করতে পারে। এই বিষয়গুলো জেলে পাড়াগুলোকে উন্নয়ন প্রক্রিয়া থেকে দূরে সরিয়ে রাখে যা প্রকারান্তরে স্থানীয় এবং জাতীয় অর্থনীতিতে তাদের অবদানকে কমিয়ে দেয়। এর ফলে তারা অন্যদের তুলনায় কম সুযোগ-সুবিধা এবং অধিকার ভোগ করতে পারে।

জেলে সম্প্রদায়ের অধিকার সমূহ
অধিকার মূলত একটি মনস্তাত্বিক বিষয় যা অধিকাংশ সময়েই ভুল ভাবে অনুধাবিত হয়। অধিকার কোন কিছুর উপরে প্রথা, আইন কিংবা সামাজিক অথবা নৈতিক মূল্যবোধ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত কোন বিষয়ের উপরে মালিকানার বিষয়ও হতে পারে। কিছু অধিকার আছে যা সার্ব্জনীন স্থায়ী, প্রাকৃতিক এবং কিছু আছে যা নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের চিন্তা ভাবনা এবং সংস্কৃতির সাথে স¤পৃক্ত।
ভোলা জেলা সহ সর্বত্রই ক্ষুদ্র জেলে সম্প্রদায়গুলো অধিকাংশ সময়েই উন্নয়ন পরিকল্পনা থেকে বাদ পড়ে থাকে, এর কারণ হল, হয় তারা ভাসমান, দরিদ্র, এদের নিজেদেও কোন জমি নেই এবং এরা প্রান্তিক এবং দুর্গম এলাকায় বসবাস করে অথবা জাতীয় অর্থনীতিতে তাদের ভ’মিকা এবং অবদান স্বল্প পরিসরে জ্ঞাত এবং অবমূল্যায়িত। এসব কারণে হয়ত তারা সরকার,এনজিও এবং দাতা সংস্থা সমূহ থেকে দুরবস্থা কাটানোর জন্য এবং তাদের অধিকার নিশ্চিত করণ এবং সেবা প্রাপ্তিতে তেমন কোন সহায়তা পাচ্ছে না।

সার্বিক পরিস্থিতি হল এই যে, চলমান দুরবস্থা এবং সামাজিক অবহেলার কারণে সকল জেলে সম্প্রদায়গুলোই উন্নত জীবিকা নিশ্চিতে নিজেদের প্রাপ্য অধিকার এবং ন্যায়বিচার দাবি করার উদ্দীপনা এবং সক্ষমতার অভাবে ভোগে। উপরন্তু তারা মাছ ধরার উপ অতি নির্ভরশীলতা কমিয়ে অন্য কোন বিকল্প ক্ষেত্রে তাদের আয় বিনিয়োগের করে একটি দীর্ঘস্থায়ী জীবিকা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে উদ্দীপনা এবং সক্ষমতার অভাবে ভোগে। এমনকি অন্য কোন শক্তিশালী বিষয়ের কারণে তারা নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারেনা।

উপক’লীয় মৎস ব্যবস্থাপনার জন্য আইনি, পারতিষ্ঠানিক এবং নীতিগত কাঠামো
বাংলাদেশে স্বাদু পানি এবং সামুদ্রিক এই উভয় ধরণের জেলেদের স্বার্থ রক্ষার জন্যদুটি মৌলিক আইন রয়েছে আর তা হল, ১৯৫০ সালে অনুমোদিত এবং ১৯৯৫ সালে সংশোধিত সুরক্ষা এবং সংরক্ষণ আইন এবং সামুদ্রিক ফিসারিজ অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৩। এই দুই ধরণের আইনই প্রণীত হয়েছিল মূলত দেশীয় এবং সামুদ্রিক মৎস ব্যবস্থাপনাকে সামনে রেখে এবং এখানে ইলিশ স¤পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলা হয়নি।

১৯৮৬ সালে মৎস এবং প্রাণি স¤পদ মন্ত্রণালয় স¤পদের অতিরিক্ত আহরণ/শোষণ এবং মাছ ধরার অসম অধিকারকে সামনে রেখে মৎস ব্যবস্থাপনা নীতিমালায় গুরুত্বপূর্ণ ধারা সংযুক্ত করে। যদিও এই নীতিমালা ইলিশ মাছকে লক্ষ্য করে করা হয়নি, এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল মাছ আহরণের মূল সুবিধা যেন শক্তিশালী অভিজাত শ্রেণীর পরিবর্তে মূল প্রান্তিক জেলেরাই ভোগ করে। নীতিমালার ক্ষেত্রে পরবর্তী বড় পরিবর্তন আসে ১৯৯৮ সালে জাতীয় মৎস নীতির হাত ধরে। স¤পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্যই এই নীতি গ্রহণ করা হয়েছিল;

১. প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ; মাছ এবং মাছ জাত পণ্য রফতানীর মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং বৈদেশিক মুদ্রা আয়;
২. জেলেদের জন্য আতœ-কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে দরিদ্রতা দূরীকরণ;
৩. পরিবেশের ভারসাম্য এবং জীব বৈচিত্র সুরক্ষা
৪. জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন

১৯৯৮ সালের মৎস নীতি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন এবং সামুদ্রিক মৎস ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বৃহত্তর কাঠামো প্রদান করেছে এবং ব্যবস্থাপনা এবং সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায় সনাতন জেলে সম্প্রদায়ের স¤পৃক্ততার বিষয়ে আলোকপাত করেছে। এই নীতিমালায় বলা হয়েছে বর্তমানে কর্মরত স্থানীয় সরকারের সাথে জেলে সম্প্রদায়ও মাছ সংরক্ষণ প্রক্রিয়ার সাথে স¤পৃক্ত হবে, যদিও কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে জেলেদের কোন প্রবেশাধিকার প্রদান করা হয়নি। এই সমস্ত নিয়ম কানুন কেন্দ্রীয়ভাবেই ঠিক করা হয়েছে এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর স¤পৃক্ততা ছাড়া অন্য কোন উপায়ে সেগুলো বাস্তবায়নের ব্যপারে ¯পষ্ট কৌশলের ঘাটতি রয়ে গেছে।

জাতীয় মৎস নীতি বাস্তবায়নের জন্য গঠিত জাতীয় মৎস কৌশলে সমুদ্র বিভাগ শিরোনামে একটি উপ-খাত থাকলেও সেখানে ক্ষুদ্র পরিসরে ইলিশ মাছ ব্যবস্থাপনা স¤পর্কিত কোন নির্দিষ্ট অধ্যায় নেই। যদিও, সরকার এই নীতিমালা এবং অন্যান্য মৎস আইনের আলোকে ইলিশ সংরক্ষণে বেশ কিছু ব্যবস্থাপনা কৌশল গ্রহণ করেছে। অধিকিন্তু, বাংলাদেশ সরকার ইলিশের এই প্রতিশ্রুতিশীল খাতকে পুনঃ আবিস্কার, উন্নয়ন, ব্যবস্থাপনা এবং সংরক্ষণ কল্পে বিভিন্ন সময়ে বহু সংখ্যক আইন, অধ্যাদেশ এবং নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। এগুলো নি¤েœ বর্ণনা করা হল;



আমাদের ফেসবুক পাতা




প্রয়োজনে কল করুন 01740665545

আমাদের ফেসবুক দলে যোগ দিন







Translate »