ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করা ক’র্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং নুরবানুকেই শোকজ দেওয়া হয়, কে’ন তিনি অনিয়মের কথা প্রকাশ করলেন!
কর্মকর্তাদের সময় মতো অফিস না ক’রার কথা ঝলক নিউজ এর দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলে দিয়েছিলেন গা’ইবান্ধার পলাশবাড়ি শিক্ষা অফিসারের অফিস সহকারী নুরবানু।
ঘটনার শুরু হয় গত ২২ নভেম্বর। ওইদিন প’লাশবাড়ি উপজেলা শিক্ষা অফিসে গিয়ে সকাল সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত অ’নুপস্থিত পাওয়া যায় শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুস ছালাম, হিসাব রক্ষক আব্বাছ আলীসহ বিভিন্ন দ’প্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।

পরে অফিসে অনুপস্থিতির কারণ জানতে চাইলে ঝলক নিউজের প্রতিবেদকে তারিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম। এ নিয়ে ওই দিনই স’ময় সংবাদে সচিত্র প্রতিবেদন প্রচার হয়। প্রতিবেদনে শিক্ষা অফিসের অ’ফিস সহকারী নুরবানুর সাক্ষাৎকার প্রচার হয়।

সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, হি’সাব রক্ষক আব্বাছ আলী ১১টার আগে অ’ফিসে আসেন না।

অনিয়মের তথ্য ফাঁস করে দেওয়ায় রোষাণলে পড়তে হয় তাকে। ঝলক নিউজের সাক্ষাৎকার দেওয়ার অভিযোগে গত ২ ডিসেম্বর অফিস সহকারী নুরবানুকে শো’কজ করে পত্র দেন জেলা শিক্ষা অফিসার হোসেন আলী। অথচ ঝলক নিউজের প্রতিবেদকের সা’থে অশোভন আচরণ, অফিসে হিসাব রক্ষক ও শিক্ষা অফিসারের অনুপস্থিতির বিষয়ে খ’বর প্রচার হলেও তাদের বিরুদ্ধে ওই সময় কোনো ব্যবস্থা নেননি তিনি।

জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা অ’ফিসার হোসেন আলী বলেন, পলাশবাড়ি উপজেলা শিক্ষা অফিসের হিসাব রক্ষক আব্বাছ আলী তার কাছে অভিযোগ করেন, অফিস সহকারী নুরবানু ঝিলক নিউজে মিথ্যা অ’ভিযোগ করেছেন। তাই তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও হিসাব রক্ষক সময় মতো অফিস না করার ব্যাপারে সময় সংবাদে খবর প্রচারের পরও কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এমন প্র’শ্নের জবাবে হোসেন আলী বলেন, সময় সংবাদে খবর প্রচারের বিষয়টি তিনি জানেন না।
গাইবান্ধা সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) সা’বেক সভাপতি অধ্যাপক জহুরুল কাইয়ুম বলেন, যারা অফিসে অনুপস্থিত থেকে সরকারি নিয়ম শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন তাদের বি’রুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়াটা জেলা শিক্ষা অফিসারের প্রথম অপরাধ। আবার টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দেওয়ায় নিরপরাধ অফিস সহকারীকে শোকজ করে তিনি দ্বিতীয় অপরাধ করেছেন। অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে দেওয়া শোকজ নোটিশ প্রত্যাহার করে অ’ভিযুক্ত হিসাব রক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচার বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তবে জেলা শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে ঝলক নি’উজের সাক্ষাতের পর রাতে সময় মতো অফিস না করায় অ’ভিযুক্ত দুই কর্মকর্তাকেও শোকজ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

সকাল ৯টা থেকে বিকেল পাঁচটা প’র্যন্ত অফিসে দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও ঝলক নিউজের প্রতিবেদক পলাশবাড়ি উপজেলা পরিষদে গিয়ে (২২ নভেম্বর) সকাল সাড়ে দশটার পরও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা ক’র্মকর্তা ও হিসাব রক্ষকের আসন ফাঁকা পড়ে থাকতে দেখেন। উ’পজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সমবায়, সমাজসেবা, পাট অ’ধিদফতর, মৎস্য, প্রকল্প বাস্তবায়ন ক’র্মকর্তার দফতরেও ছিল একই চিত্র।
দিনাজপুর থেকে অ’ফিস করায় বেলা ১১টার পরও সাক্ষাৎ মেলেনি উপজেলা খাদ্য নি’য়ন্ত্রকের। এসময় সেবা প্রত্যাশীদের বিভিন্ন দপ্তরের সামনে অপেক্ষা করতে দেখা যায়।
ঝলক নিউজের উপস্থিতি জা’নতে পেরে নিজ কার্যালয়ে না গিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা ক’র্মকর্তা বেলা পৌনে ১২টার দিকে অফিসার্স ক্লাবের সামনে অবস্থান নেন। সেখা’নে গিয়ে তার কাছে দেরিতে আসার কারণ জানতে চান ঝলক নিউজের প্রতিবেদক। এসময় তিনি সময় সংবাদেরও মা’ইক্রোফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন ।
এ ব্যাপারে সময় সংবাদে খবর প্র’চার হওয়ার পরদিন ২৩ নভেম্বর যথা সময়ে অফিস না করার অভিযোগে অভিযুক্ত উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম ক’র্মকর্তা-কর্মচারীদের সময় মতো (সকাল ৯-৫টা) অফিসে উপস্থিত ও প্রস্থানের পাশাপাশি মুভমেন্ট রেজিস্ট্রার মেইন’টেইনের জন্য নির্দেশনা জারি করেন।

সূত্রঃ সময় নিউজ