শিশুর খাদ্যনালি থেকে বের হলো স্পাইডারম্যান

Spread the love

রমজান মাসের আ’ট রোজা চলছে। ইফতার তৈরিতে ব্যস্ত আ’ম্বিয়া বেগম। খেলায় ব্যস্ত দুই ছে’লে। হঠাৎ চিৎকার ক’রে কাঁদতে থাকে ছোট ছেলে ছয় মাস বয়’সের আবু তালহা। তি’ন বছরের জোবায়ের খে’লতে গিয়ে ছোটভাইকে প্লাস্টি’কের খেলনা স্পা’ইডারম্যান খাইয়ে দি’য়েছে।

ফরিদপু’রের সালথা উপজেলার কৃ’ষক হাফিজুল ইসলাম ছেলেকে নি’য়ে দৌড়ান জেলা সদরে। চা’র হাসপাতাল, ডাক্তারের চেম্বার ঘুরে কোনো ব্য’বস্থা না করতে পেরে পা’ড়ি জমান ‘ঢাকায়। বঙ্গবন্ধু মে’ডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডি’কেল কলেজ হাসপাতাল, ব’ক্ষব্যাধি হাসপাতাল, শহীদ সো’হরাওয়ার্দী মেডিকেল কলে’জ হাসপাতালসহ নয়টি হাসপাতাল ঘুরে চলে যায় চার মাস। মৃত প্রায় ছে’লেকে নিয়ে অবশেষে রাজ’ধানীর তেজগাঁওয়ের জা’তীয় নাক, কান, গলা ইনস্টি’টিউটে গেলে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন চি’কিৎসকরা। এর মধ্যেই ব’ন্ধ হয়ে গেছে শিশুর একপা’শের ফুসফুসের কাজ। জ’টিল অপারেশন শেষে হাসি ফোটে চিকিৎসকদের মুখে। শি’শুর খাদ্যনালি থেকে বের করে আ’না হয় খেলনা স্প্যাই’ডারম্যান। আস্তে আস্তে সু’স্থ হতে থাকে আ’বু তালহা।

অপারেশনে চা’রজনের দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন জাতীয় নাক, কা’ন, গলা ইনস্টিটিউটের পরিচা’লক অধ্যাপক ডা. মো. আবু হানিফ। তিনি বাং’লাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ছয়’ মাস বয়সে শিশু’টি খেলনা স্প্যাইডারম্যান খেয়ে’ ফেলে। আমাদের কাছে আসে চার মাস পর। খেলনা খাদ্য’নালিতে আটকে থাকায় খেতে পারছি’ল না শিশুটি। এক্স-রেতে দেখা যা’য় এর মধ্যেই শিশুর একপাশের ফুসফুস কাজ করছে না। অপা’রেশনের ধকল নেওয়ার মতো শি’শুর শারীরিক পরিস্থিতি না থাকায় খুবই ঝুঁকি’পূর্ণ হয়ে পড়ে। অব’শেষে গলার মধ্যে টিউব দিয়ে বিশেষ প্রক্রিয়ায় খেলনাটি বের করে আনা হয়। এখন ফুসফুসও কাজ করছে। শিশুটি মুখে খাবার খেতে পারছে। সুস্থ হওয়ায় বাবা-মায়ের স’ঙ্গে বাড়ি ফিরে যা’চ্ছে আবু তালহা।’ এই বিশেষ’জ্ঞ চিকিৎসক আরও বলেন, ‘শিশুদের খে’লনা দেওয়ার সময় অভিভাবক’দের আরও সতর্ক থাকতে হবে। এ ধরনে’র ছোট প্লাস্টিক কিংবা রাবারের খেলনা, বোতলের ছিপি, পয়সা শিশুদের থেকে দূরে রাখতে হবে। নয়তো এসব খেলনা প্রাণ’ঘাতী হয়ে উঠতে পারে।’

হাসপাতা’লের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. পলাশ চন্দ্র সরকা’র বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘জাতী’য় বক্ষব্যাধি হাসপাতাল থেকে শিশু আবু তাল’হাকে (১০ মাস) আমাদের হাসপাতালে ২০ অক্টোবর দুপুরে রেফার্ড করা হয়। তা’রা এর আগে আরও ১২টি হাসপাতা’লে ঘুরেছে শিশুটিকে নি’য়ে। চার মাসের বেশি সম’য় খেলনা খাদ্যনালিতে আটকে থাকায় শিশুর শারীরিক পরিস্থিতি খারাপ হয়ে পড়েছিল। তার বাবা কৃ’ষক হাফিজুল ইসলামের সামর্থ্য না থা’কায় শিশুর অপারে’শন, ওষুধ, থাকা, খাওয়া সবকিছু ফ্রি করে দে’ওয়া হয়েছে।’ শিশুটির বাবা হাফিজুল ইসলাম বলেন, খেলতে গি’য়ে ২ মে আমার বড় ছেলে শিশু তালহাকে প্লাস্টিকের খেলনা স্প্যাই’ডারম্যান খাইয়ে দেয়। এ ঘট’না জানার পর ফরিদপুর সদর হাসপা’তাল থে’কে শুরু করে দুটি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডাক্তারের চে’ম্বারে যাই। কোনো সুরাহা না হ’ও’য়ায় ছেলেকে বাঁচা’তে ঢাকায় আসি। প্রথ’মে ঢাকা শিশু হাসপাতালে যাই। ভর্তি করার পর চিকি’ৎসকরা বলেন, এখানে চিকি’ৎসা হবে না ঢাকা মেডিকেলে যেতে হবে। সেখান থেকে চিকিৎসকরা জাতীয় বক্ষব্যা’ধি হাসপাতালে পাঠি’য়ে দেন। সেখানে ১৪ দিন ভর্তি থাকার পর তারা মাতুয়াইল শি’শু মাতৃ সদন হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। তা’রা আবার শহীদ সো’হরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠান। সেখানে কয়েক দিন চিকিৎসা’ধীন থাকার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববি’দ্যালয়ে শিশু বিভাগে পা’ঠান। সেখানে কোনো ব্যবস্থা না হওয়ায় বেসরকা’রি একটি হাসপাতালে যাই। ধীরে ধীরে আমার ছেলের শারীরিক অ’বস্থা খারাপ হতে থা’কে। মায়ের বুকের দুধ ছাড়া আর কি’ছুই খেতে পারত না। এরপর আরেকটি বেসরকারি হাসপা’তালে যাই। সেখান থেকে একটি ডা’য়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি ক’রাই। সেখান থেকে আবার বক্ষব্যাধি হাসপাতালে আসি। ২৮ দিন ভ’র্তি থাকার পর তারা জা’তীয় নাক, কান, গলা ইনস্টিটিউটে পাঠা’ন। তিনি আরও বলেন, এই হাসপাতালে ১০ টাকায় টিকি’ট সংগ্রহ করি আর ১৫ টাকা’য় ভর্তি করি। ভর্তির পরের দিনই আ’মার ছেলের অপারেশন হয়। আগের হাসপা’তালে ঘুরে আমাদের প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ’ হয়। অপারেশনের টাকার জোগা”ন আমাদের ছিল না। পরিস্থিতি দেখে অপারেশন, থাকা, খাওয়াসহ পুরো চিকি’ৎসা বিনামূল্যে করে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ছে’লে মুখে কিছুই খেতে পারছিল না। সবকিছু তরল করে খা’ওয়াতে হতো। আমাদের সামর্থ্য না থাকায় চিকিৎসকরা নিজেদের টাকায় ব্লে’ন্ডার কিনে দিয়েছে। ছেলে সুস্থ হয়ে ‘যাও’য়ায় আমরা আজ বা’ড়ি ফিরে যাব।



আমাদের ফেসবুক পাতা




প্রয়োজনে কল করুন 01740665545

আমাদের ফেসবুক দলে যোগ দিন







Translate »