মজান আলীরা তো মরে গিয়ে বাঁচলো,আমরা বেঁচে আছি কেন?আমাদেরও মরে যাওয়াই উচিত!

Spread the love
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের গৃহবধূর মতই স্বামীকে বেঁধে তারই সামনে ১২ জন মিলে রাতভর গণধর্ষণ করেছিলো সুবর্ণচরের গৃহবধূকে।শুধুমাত্র চেতনায় সামর্থন করেনি এটাই ছিলো ওই গৃহবধূর অপরাধ।ধর্ষক জামিনে মুক্তিও পেয়েছে!জেল থেকে ন্যায় বিচারকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বের হয়ে যখন ধর্ষক দাঁত কেলিয়ে হাসছিলো তখন সুবর্ণচরের মা আত্মহত্যার জন্য ফাঁসির দড়ি খুঁজে বেড়াচ্ছিলো।
বেগমগঞ্জের ঘটনা হজম করার আগেই গোপালগঞ্জেও ঘটেছে একই ঘটনা। প্রাইভেট পড়ে বাসায় যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীকে পথ আটকিয়ে তুলে নিয়ে বন্ধুদের নিয়ে গণধর্ষণ করে প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়ুয়া আলী হোসেন।সেটার আবার ভিডিও ধারণও করেছে ব্ল্যাক মেইলের জন্য।একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এতটা জঘন্য মানসিকতার হতে পারে ভেবে অবাক হচ্ছি।শিক্ষিত হলেই মানুষ সুশিক্ষিত হয় না।
এদিকে চাপাইনবাবগঞ্জে সোনার ছেলে কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হয়েছে এক কিশোরী।বিচার হিসেবে ৭৫ হাজার টাকায় ইজ্জতের মূল্য নির্ধারণ করায় অতি খুশিতে আত্মহত্যা করেছে মেয়েটি।
স্বাধীন বাংলায় নারীর ইজ্জতের দাম মাত্র ৭৫ হাজার টাকা?পেয়াজের দামও তো এর চাইতে বেশি!
সোনার ছেলে কর্তৃক সিলেটের এমসি কলেজে স্বামীর থেকে কেড়ে নিয়ে স্ত্রীকে গণধর্ষণের ২ দিনের মাথায়ই সিলেটে ৫ম শ্রেনীর এক কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে আরেক সোনার ছেলে।তারই ১ দিন পর ঢাকায় এক তরুনীকে ধর্ষণ করে গ্রেফতার হয়েছে আরেক সোনার ছেলে।অথচ এই সোনার ছেলেই সিলেটের ঘটনার পর ধর্ষকদের লিঙ্গ কেটে ফেলার দাবি তুলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস পোস্ট করেছিলো।
তাজ্জব ব্যাপার,ফেসবুকে ধর্ষকদের লিঙ্গ কর্তন করতে চাওয়া মানুষটাই নিজের লিঙ্গ সামলাতে পারলো না!
প্রমাণ হইলো,ফেসবুকে ধর্ষকের বিচার চেয়ে চিল্লানো সবাই ভালো মানুষ না।ফেইসবুকে যারা বিশাল মহা মানবিক নেতা তারাও মহাপশু হতে পারে!
আচ্ছা, ফ্ল্যাশব্যাকে যাওয়া যাক একটু-
হাত-মুখ বেঁধে প্রথমে ধর্ষণ তারপর হত্যা করে কম্বলে মুড়িয়ে রাখা হয়েছিলো মাতুয়াইলের ৭ বছরের শিশু রুনিকে।
ঠিক যেভাবে ব্লেড দিয়ে কেটে যৌনাঙ্গের প্রবেশ পথ বড় করে রাতভর ধর্ষন করে হত্যা করা হয়েছিলো দিনাজপুরের ৫ বছরের শিশু পূজাকে।
কখনো কল্পনা করেছেন ব্লেড দিয়ে যৌনাঙ্গ বড় করার সময়ে পূজার আর্তচিৎকারটা কেমন হতে পারে?
চোখ বুঝে থাকুন এক মিনিট, প্লিজ…….
বিচার হয়নি, থামেনি ধর্ষকদের নগ্ন উল্লাস। উল্টো কয়েক মাস পরেই জামিনে মুক্তি পেয়েছিলো পূজার ধর্ষকেরা।
আশেপাশে রেল লাইন থাকলে হয়তো পূজা কিংবা রুনির বাবাও মেয়েকে নিয়ে সেদিন আত্মহত্যা করতো।
ঠিক যেমন করে বিচার না পেয়ে মেয়েকে নিয়ে রেল লাইনে আত্মহত্যা করেছিলো ঢাকার রমজান আলী।
মেয়েকে তুলে নিয়ে ধর্ষন করার পর রমজান আলী বিচার চাইতে গেলে মাত্র ১০০০ টাকায় মূল্যায়ন করা হয়েছিলো মেয়ের ইজ্জত!১০০০ টাকার কড়কড়ে নোট দেখে নিশ্চয়ই ফাতেমা তার ক্ষত ভুলে গেছিলো।
কিন্তু সেই টাকা হাতেই তার পরদিন বাবা মেয়ে ট্রেনের নিচে ঝাপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে।কারন যাদের কাছে সে বিচার চাইতে গেছে তারাই তার দুইদিন পর এক মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রাতভর ধর্ষন করেছে, যদিও নাম বললে চাকরি থাকবে না।
এটি দেখলে রমজান আলী হয়তো দুইবার আত্মহত্যা করতো।
স্বাধীন বাংলায় নারীর ইজ্জতের বিশাল ডিসকাউন্টে ১ হাজারে ছিলো তখন! ধর্ষকদের জন্য যেন শায়েস্তা খাঁর সস্তা আমল চলে এসেছিলো।
জুরাইনে একটি মেয়েকে স্কুল কক্ষে আটকে রেখে ৮ জন মিলে রাতভর ধর্ষন করার কাহিনীও কি আপনারা ভুলে গেছেন?ভাগ্যিস সেদিন মেয়েটির আর্তচিৎকার চার দেয়ালের বাইরে আসেনি, বাইরে এলে সুশীলেরা হয়তো তার সেই চিৎকার শুনেও হাততালি-ই দিতো।
নাকি ভুলে গেছেন সিলেটের বিয়ানীবাজারের চাঞ্চল্যকর শিশু ধর্ষণের ঘটনা?টানা ১৭ দিন ঘরের মধ্য আটকে রেখে পূজার বয়সী শিশুটিকে ডেইলি ৩ বার করে ধর্ষণ করতো ওই জানোয়ার!
আচ্ছা, আমিন জুয়েলার্সের গর্বিত পুত্রের মাস্তি করতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার তরুণীটি কি ন্যায় বিচার পেয়েছিলো?নাকি কাড়ি কাড়ি সোনা দিয়ে সব জায়গাগুলো ভরে দিয়েছে?অবশ্য বিশাল শিল্পপতির একটা দুধের বাচ্চা এসব করতেই পারে।এতে অন্যায়ের কিছু দেখেন না টাকাওয়ালারা।
আরো আছে, অসুস্থ মা’কে হাসপাতালে দেখে বাসায় ফিরছিলো পটুয়াখালীর বাউফলের এক তরুনী, রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে জংগলে গাছের সাথে বেঁধে পালাক্রমে গণধর্ষণ করেছিল কিছু জানোয়ার, তাও পবিত্র ঈদের দিনে!
এই ঈদের দিনেই বান্ধুবিদের সাথে নৌকায় ঘুরতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছিল সাভারের নিমেরটেক এলাকার এক তরুণী।রাষ্ট্রের গ্রাম্য মাতবর নামক সুশীল সমাজের প্রাণীরা বিচারস্বরূপ মা-মেয়েকে চুপ থাকতে কিংবা এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলেছিল।
কি বিচিত্র আমাদের সমাজ ব্যবস্থা।এ দেশে মেয়ে জন্ম দিয়ে যেন মা-ই ভুল করেছে, তাই এলাকা ছাড়তে হবে!
আপনারা কি ওই কাহিনীটা ভুলে গেছেন?
বাসায় মা-মেয়েকে একা পেয়ে কিছু জানোয়ার বাসায় ঢুকে মা’কে বেঁধে রেখে মেয়েকে ধর্ষন করেছিলো।
নিরূপায় মা বারবার চিৎকার করে বলেছিলো,বাবারা,ও ছোট, এক জন একজন করে যাও’ সেদিনও কেউ শুনেনি মায়ের আর্তনাদ ,বিচার হয়নি হয়েছে ইতিহাস কিন্তু এভাবে আর কত?আর কত এভাবে লাঞ্ছিত আর ধর্ষিত হয়ে ইতিহাস হবে নারীরা!
৮০ বছরের বৃদ্ধাও যখন ধর্ষনের শিকার হয়, তখন এই লজ্জা কোথায় রাখি!
ফেভিকলের আঠাযুক্ত নরম গদির মানুষেরা তো মানবতাবাদী, প্রগতিশীল, সভ্য মানুষ। তাই তারা এসব আধুনিক সমাজের সামান্য দুষ্টামি বলে চালিয়ে দেয়।
সুশীলেরাও আজ চুপ।চেতনাধারী অচেতনরা আজ অন্ধ।মানবতাবাদী মুক্তমনারা আজ বোবা।
তথাকথিত নারীবাদীরাও আজ কথা বলবে না, এসব নিয়ে কথা বলতে তো আর ডলার আসে না। সমাজ
ধংস হোক। নারী লাঞ্চিত হোক। ধর্ষিত হোক। রেল লাইনে কাটা পড়ে মরুক।তাতে তথাকথিত সুশীল চেতনাধারী মানবতাবাদীদের যেন কিছুই যায় আসে না!
কিন্তু, এভাবে আর কত?
রমজান আলীরা তো মরে গিয়ে বাঁচলো, আমরা বেঁচে আছি কেন?আমাদেরও মরে যাওয়াই উচিত!
এদেশে সাঁওতাল ধর্ষিতা হলে সিনেমা হয়।পাহাড়ি ধর্ষিতা হলে আন্দোলন হয়,সংখ্যালঘু ধর্ষিতা হলে তুফান ওঠে মানবতাকর্মীদের ঠোঁটে।নায়ক-নায়িকা কেলেঙ্কারিতে মিডিয়ায় চলে তোলপাড়।সেরা সুন্দরী খোঁজার প্রতিযোগিতায় উত্তপ্ত হয় দেশ,আর পূজা কিংবা রুনিরা কচি বয়সে ধর্ষিতা হয়ে ঝরে যায়।নারীরা লাঞ্ছিত আর ধর্ষিত হয়ে হয় ইতিহাস।
রমজান আলীরা ন্যায় বিচারের অভাবে প্রাণ দেয় রেল লাইনে।বিচারহীনতার সংস্কৃতি এখন স্বাভাবিক শব্দটির থেকেও বেশি অস্বাভাবিক হয়ে গেছে আমাদের সমাজে।
লেখকঃ
মোঃআজিজুল হুদা চৌধুরী সুমন
সদস্য,কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি জাতীয় পার্টি
সহসভাপতি,জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটি
সভাপতি,জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ



আমাদের ফেসবুক পাতা




প্রয়োজনে কল করুন 01740665545

আমাদের ফেসবুক দলে যোগ দিন







Translate »