ভোলা চরফ্যাশনের স্কুল ও মাদ্রাসার প্রায় অর্ধশত শিক্ষক-শিক্ষিকার এমপিওর ফাইল অযৌক্তিক কারণ দেখিয়ে রিজেক্ট করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বরিশাল অফিসের উপ-পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত) মোঃ আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে৷
গত মঙ্গল বার (২২ সেপ্টেম্বর) চরফ্যাশনের এমপিও বঞ্চিত শিক্ষক-কর্মচারীগণ
এক লিখিত বক্তব্যে অভিযুক্ত বরিশালের ডিডি সম্পর্কে চরশশীভূষণ হোসাইনিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক (সমাজবিজ্ঞান) মোঃ হান্নান বলেন, আমি জুলাই-২০২০ মাসে এমপিওভূক্তি হওয়ার লক্ষ্যে ডিডি বরিশালের নিকট আবেদন করি। বি.এড পাশ থাকা সত্বেও বেতন কোড ১০ চাওয়ায় আমার আবেদন বাতিল করে দেন৷
সেপ্টেম্বর মাসে পুনরায় আবেদন করলে সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসায় মহিলা কোঠা পূরণ না থাকার কারণ দেখিয়ে আমার সে আবেদনও রিজেক্ট করে দেন। তিনি আরো বলেন আমি ২০০১ সালে নিয়োগ নিয়েছি। আর মাত্র ৫ বছর আমার চাকুরীর মেয়াদ আছে। এমন মূহুর্তে আমার প্রতি ডিডি কর্তৃক হয়রানী অমানবিক বলে আমি মনে করি।
একই উপজেলার উত্তর আইচা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক রাশিদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, সরকারী বিধি মোতাবেক সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে বেতন কোড ৮ প্রাপ্য থাকলেও আমি ৮ কোড চাওয়ায় ডিডি বরিশাল কর্তৃক জুলাই ও সেপ্টেম্বরের এমপিওতে আমার আবেদন রিজেক্ট করে দেন।
এওয়াজপুর অজুফিয়া আলিম মাদ্রাসার সহ-সুপার ইকবাল হোসেন বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের ৫৭.০০.০০০০.০৪৩.১৬.০০৯.১৭.৯০১, তারিখ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ এর পরিপত্র মোতাবেক আমি সহ-সুপার পদে নিয়োগ পাই।
জুলাইর এমপিওতে ডিডির নিকট আবেদন করলে আমার নিয়োগ প্রক্রিয়া তদন্ত করার জন্য জেলা শিক্ষা অফিসার, ভোলাকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। জেলা শিক্ষা অফিসার ভোলা কর্তৃক তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পর ডিডি আমাকে ফোন করে আমার অভিজ্ঞতা প্রমানের জন্য পূর্বের প্রতিষ্ঠানের সকল এমপিও তাকে দেখাতে বললে আমি এ করোনার মধ্যে ১৫ বছরের ৩০টি মূল এমপিও কপি তাকে দেখানোর পরেও তিনি আমার আবেদন রিজেক্ট করে দেন।
ওসমানগঞ্জ আইডিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (বাংলা) মোঃ ইকবাল হোসেন ও সহকারী শিক্ষক (ব্যবসায় শিক্ষা) মোঃ নাজিম বলেন, মহিলা কোটা পূরণ না থাকায় তাদের আবেদনও রিজেক্ট করা হয়। অথচ পরিপত্র মোতাবেক ৩ বার জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে মর্মে তারা জানান। এমনকি চর আইচা হোসাইনিয়া দাখিল মাদ্রাসার ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী মোঃ আলমের এমপিওর আবেদন রিজেক্ট করা হয় ঐ মাদ্রাসার ১ম এমপিওকপি অস্পষ্ট থাকার কারণ দেখিয়ে৷
এ জাতীয় তুচ্ছ কারণ দেখিয়ে চরফ্যাসন, লালমোহন, বোরহানউদ্দিন, ভোলার শতাধিক এমপিওর আবেদন রিজেক্ট করেন বরিশালের ডিডি মোঃ আনোয়ার হোসেন।
উল্লেখ্য গত ৩ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোমিনুর রশিদ আমিন স্বাক্ষরিত পত্রে উল্লেখ করা হয় শিক্ষকদের এমপিও ভূক্তিতে অনাহুত হয়রানী করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এমন আদেশে চরফ্যাশনের এমপিও বঞ্চিত শিক্ষক-কর্মচারীগণ বরিশালের ডিডি মোঃ আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্যেও আবেদন জানান৷
এ বিষয়ে ডিডি মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি অনাহুত হয়রানি করিনি। সকল ফাইল বিধি মোতাবেক রিজেক্ট করেছি।