প্রচলিত আছে যদি জামাই আদর কদর পেতে চান ভোলা বিয়ে করুন

ভোলাতে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা রক্ষায় কনের পিতাকে জীবন্ত লাশ বানানো হচ্ছে !

Spread the love

আজকের ঝলক নিউজ ভোলাতে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা রক্ষায় কনের পিতাকে জীবন্ত লাশ বানানো হচ্ছে !

 

দেশের  অন্য জেলার থেকে ভোলাতে বিয়ের সংস্কৃতি হচ্ছে সম্পূর্ণ আলাদা, প্রচলিত আছে যদি জামাই আদর কদর পেতে চান ভোলা বিয়ে করুন । কারণ ভোলার মানুষ যৌতুক ছাড়া বিয়ে করে না। ভোলার মানুষ যৌতুককে বৈধতা দিয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। এখানে যৌতুক নেওয়াটা একধরণের ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। ভোলাতে মানুষ বিয়ের সময় টাকা নেওয়াকে যৌতুক মনে করে আর বাকি গুলোকে তাদের অধিকার মনে করে।
নিচে বিভিন্ন অপসংস্কৃতি উল্লেখ করা হলো:

ভোলাতে বিয়ের সময় বর পক্ষের ৪০০/৭০০/১০০০ মানুষকে খাওয়াতে হয়। খাবার ম্যানুতে থাকে চিংড়ি,গরুর মাংস,খাসির মাংস,রূপচাঁদা মাছ,ডিম,পোলাও ভাত,মুরগি,চিকেন টিক্কা,পায়েস,মিনারেল ওয়াটার,কুক ও বিভিন্ন ধরনের সবজিসহ আরো অনেক কিছু। এসব আইটেমে কোন কিছু কমবেশি হলে বা কোন আইটেমে সামান্য লবণ বেশি হলে শুরু হয়ে যাবে কনে পক্ষের সাথে বর পক্ষের তর্কাতর্কি । কারনণ বর পক্ষ এগুলো তদারকির জন্য একজন ব্যারিষ্টার রাখে যার কাজ হল কনে পক্ষের দোষ খুঁজে বের করা।

বিয়ের পূর্বে যদি আকদ হয় তখন কিন্তু প্রায় ২০০/৩০০ জন মানুষের খাবারের আয়োজন করতে হয়। বিয়ের পর শুরু হয় বিভিন্ন পর্বের দাওয়াতনামা, নতুন জামাই বিয়ের পর শ্বশুর বাড়িতে যাবে তবে একা যেতে পারবে না, ৮০/১০০/১৫০ জনের বিশাল বহর নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে যেতে হবে, না হয় মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে! নতুন জামাইয়ের পর্ব শেষ হলে কিছুদিন পর শুরু হবে শ্বশুর ও শ্বাশুড়ি পর্ব কারণ নতুন জামায়ের সাথে শ্বাশুড়ি আসতে পারবে না, এটা তথাকথিত ”বুড়া/বুড়ির” মানা (নিষেধ)।

শ্বাশুড়িও তাদের বিশাল বহর নিয়ে এসে খেয়ে যাবে এবং কিছু খাবার সাথে নিয়ে যাবে। এখানে কিন্তু শেষ না, বিয়ের সময় বরের ভাই-বোনের স্বামী বা অন্য কেউ বিদেশে ছিল যার কারণে সে আসতে পারে নি, সে যখন দেশে আসবে তখন তার সাথেও ১০-৩০ জন যেতে হবে।

এরপর শুরু বছরি জিনিস আমের মৌসুম আসলে দিতে হয় ৫০-৬০ কেজি আম, আনারস, কাঠালসহ আরো বাহারি রকমের ফল ফল-ফলাদি।

সময় দিতে হয় মেয়ের শ্বশুর বাড়ির চৌদ্দ গোষ্টিকে ইফতারি’সহ আরো হরেক রকম আইটেম।

সময় ছেলের পরিবার, বোনের স্বামীসহ সবাইকে শপিং করে দিতে হয়। তবে ঈদের সময় ছেলে পক্ষের সবাই আসবে এটা স্বাভাবিক বিষয় এবং এর ফলে দুই পরিবারের মাঝে সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হয়।

দিতে হবে গরু, গরু রান্না করার জন্য তৈল, মসাল্লা, পিয়াজ ইত্যাদি, মহরম আসলে দিতে হবে ১৫/১৬টি মুরগি ও ৮/১০ কেজি গরুর মাংস রান্না করে।
শীতকাল আসলে দিতে হবে হরেকরকম শীতেরপিটা, তালপিটা ইত্যাদি। এছাড়া বাৎসরিক উৎসবের আইটেম তো আছেই।

বিভিন্ন জিনিস ফেনীতে বিয়ের পূর্বেই বর পক্ষের বাড়িতে পৌঁছে দিতে হয়। ফার্নিচারের মধ্যে থাকে বিভিন্ন ধরনের উন্নতমানের জিনিসপত্র তারমধ্যে ফ্রিজ, টিভি, গ্যাসের চুলা এগুলোও বাধ্যতামূলক দিতে হয়। এছাড়া কনে পক্ষের অতিথিদের দেয়া উপহারের অধিকাংশ জিনিসও বর পক্ষকে দিয়ে দিতে হয়।

বিয়ের পর যখন কনের বাচ্চা হয় তখন বাচ্চার দোলনা,সাবান,পাউডার,লোশন ও বিভিন্ন ধরনের কাপড়সহ আরো অনেক কিছু কনের পক্ষ থেকে দিতে হয়। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বদলে গেছে বিশ্ব। এমনকি আমাদের দেশও অনেক বদলে গেছে। কিন্তু বদলাতে পারি নাই আমরা ভোলার মানুষ গুলো।

ছবি : সংগৃহীত



আমাদের ফেসবুক পাতা




প্রয়োজনে কল করুন 01740665545

আমাদের ফেসবুক দলে যোগ দিন







Translate »