ভালোবাসার গল্প ডায়রী থেকে

ভালো থেকো প্রিয়;মোঃ জহিরুল ইসলাম

জানুয়ারি ১৯ ২০২১, ১৫:৫১

Spread the love

ভালো থেকো প্রিয়

আমাদের দুজনের ভালবাসা দিবস আশাছিল অনেক সুন্দর ভাবে দিনটাকে পালন করবো । কিন্তু বেশি আশা করা ভুল সেটাই হলো । বেশি আশা করলে বেশি কস্ট পেতে হয় সেটা অবশেষে বুঝতে পারলাম । আমার ভালবাসাকে কখনো অবিশ্বাস করিনি । খুব বিশ্বাস করি ও ভালবাসি। জানিনা কেন মতিমার কথা শুনে নিজেকে ঠিক রাখতে পারলামনা । সুপ্তা নামের একটি মেয়েকে জড়িয়ে অনেক কিছু বল্ল। আমি অনেকবার ওর মোবাইলে ফোন করার চেষ্টা করেছি কিন্তু ফোনট বন্ধ ছিল । পরের দিন আমার ভার্সিটিতে অনুষ্ঠান, বিকালে আমার কাছে ফোন দিলো, কিছু না জেনে বুঝে, যাচাই না করে আমি ওকে অনেকগুলো আজে-বাজে কথা বল্লাম, ও মিরপুর ছিল সেখান থেকে রাজেন্দ্রপুর গেছে একটি কাজে। আমি ওর বাসায় গিয়ে অনেক খারাপ কথা লিখে রেখে আসছি । কেন জানি আমার মাথা ঠিক ছিলনা ও রাতে ফোন করে অনেক কিছু বল্ল, কেমন ভালবাসা আমি একথা কেউ ভাবতে পারেযে নিজের প্রিয়জনকে প্রতারক, ঠকবাজ, বিশ্বাসঘাতক, চরিত্রহীন এসব বলে, আমি এত নীত হয়ে গেছি ভাবতেই পারিনি । নিজেকে একটা ছোট মনের মানুষ ও খুব অপরাধী মনে হলো । পরের দিন সকালে ও আমাকে বিদায় জানানোর জন্য এসএমএস দিল । কিন্তু ও হয়তো ভেবেছে অন্য কারো সাথে আমি সম্পর্ক করবো এর জন্য ওরকাছ থেকে দূরে যেতে চাই । কিন্তু ওর কাছ থেকে বিদায় মানেই মৃত্যু তা ভাবতে পারেনি, ভার্সিটিতে অনুষ্ঠানে গেলাম, আধুনিক গানে প্রথম হলাম ওকে জানালাম, ও ভার্সিটিতে গেল কিন্তু কথা হলোনা ।

সন্ধ্যায় আম্মার সাথে মিরপুর গেলাম ওর জন্মদিনের উপহার দেবার জন্য । ৫টা ঘুমের ট্যাবলেট কিনলাম পরের দিন ২৫ শে নভেম্বর । রাতে ঔষধ খেয়ে ওর কাছ থেকে বিদায় নিলাম । ও খুব কস্ট পেল । বল্লো বমি করতে, এরপরে নাকি আম্মার, আব্বুর ও ভাইয়ের ফোনে আমার মোবাইলে অনেকবার ফোন করেছে কিন্তু কেউ রিসিভ করেনি । শেষ পর্যায়ে রাত ৪.২০ মিনিটে এ ভাই এসে আামাকে অনেক ডাকাডাকি করে উঠালো ৪.৩০ মিনিটে ওর সাথে কথা বল্লাম, সারারাত সে ঘুমায়নি, সকালে ফুল নিয়ে বাসায় গেলাম, কোন কথা না বলে রেডি হয়ে বাইরে থেকে তালা দিয়ে চলে গেলো আমি রুমের ভিতরে একা । প্রায় দুপুর ১টার দিকে বাসায় এলো । আমি আসার সময় ওর পা ধরে মাফ চাইলাম । কিন্তু ও মাফ করলোনা । বল্লো সে নিকৃষ্ট খারাপ তার পা ধরলে আরও আমার অপমান হবে । আমি জানতে চাইলাম ও কেন আমাকে বাঁচিয়েছে । ও বটি এনে বল্লা একটা কোপ দাও, ভাবলাম আমাকে বলছে তাই ছুড়ি এনে নিজের হাতে ধরলাম কাটার জন্য, ও হাত থেকে ছুড়িটা নিয়ে গেল এবং ওড়না টেনে ধরে বসতে বল্ল । কিন্তু আমি কয়েকবার উঠতে চাইলে ও উঠেই দুই গালে দুটো ধাপ্পর দিলো এবং আমাকে ধরে আমার পাঠানো এসএমএসগুলো দেখালো আরো অনেক কিছু বল্ল, এক পর্যায়ে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেল্লাম তার পরে আর কিছু মনে নাই । অনেকক্ষণ পরে দেখলাম আমি বিছানায় শোয়া দুজনে খুব কাঁদলাম। এর পরে বাসায় এলাম এভাবেই অতিবাহিত হলো ২৫ নভেম্বর আমাদের ভালবাসা দিবস।


পরের দিন সকালে ওর সাথে কথা বল্লাম রাতে খুব জ্বর উঠেছে। আমি স্বাভাবিক হতে পারছিলাম না । খুব খারাপ লাগছিলো যে বাবা কোন দিন গায়ে হাত দেয়নি কিন্তু ভালবাসার মানুষের চর কপালে জুটলো । ও নিজের উপর প্রতিশোধ নিল । নিজের হাত দরজার সাথে চাপ দিল, আমি বুজতে পারছিলাম ও কিছু একটা করবে, বাসায় গিয়ে হাত দেখলাম । বল্ল এই অবেলায় তুমি বাইরে কেন ? আমার কিছু হয়নি ওর মুখ দেখেই বুজতে পারলাম কিছু একটা হয়েছে । এরপরে গোসল করে জামাকাপড় পড়ার সময় ধরা পরলো কিছু স্বীকার করলোনা । এর পরের দিন ২৮ এপ্রিল ব্যাংকার্স ক্লাবের অনুষ্ঠানে দেশত্বাবোধক গানের অনুষ্ঠানে ওর উপস্থিতি দেখে আমি এতো খুশি হয়েছি যে কাউকে বুঝাতে পারবোনা । পুরুস্কার পাওয়ার চেয়ে আমার ভালবাসার মানুষের হাতে তালিতে আমি খুশি, খুব- খুব- খুব খুশি । ২ জুন আমার ভাইয়ের জন্মদিন ও বল্ল আসবে, কিন্তু রাতে এলনা, ও দুই মাস যাবৎ খুব কস্টে আছে টাকা পয়সার দিক দিয়ে। তাই ওকে আমি কোন গিফট আনতে নিষেধ করলাম, কিন্তু ওকি সেরকম ছেলে যে এমনিতে আসবে । সন্ধ্যায় আমি ওকে ফোন দিলাম , ওকে আমি কিছুই বলতে দিলাম না, নিজেই বলতে লাগলাম ও হাসতে লাগলো ওকে বল্লাম আমার ভাইকে নিজের ভাইয়ের মতো জানোনা, জানলে ঠিকই আসতে এখনই এমন অবস্থা পরে কি করবা তা জানা আছে ইত্যাদি ইত্যাদি । এক পর্যায়ে ওর অস্তিত্ব নিয়ে কথা বল্লাম, আম্মা ওকে ও আমাকে নিয়ে কত আজেবাজে কথা বলেছে, কিন্তু ও কেন আমাকে নিয়ে গেলনা । ওকে এক পর্যায়ে পুরুষুত্বহীন কাপুরুষ বল্লাম আহারে !! এতো বড় বড় কথা ওকে আমি কিভাবে বলতে পারলাম ভাবতে পারিনি, শাহসের কথা বলতে গিয়ে এই কথা কেন বল্লাম ভাবলাম বলবো শাহস থাকলে ঠিকই নিয়ে যেতে তুমি কেন বাসা থেকে নিয়ে গেলেনা ।

কিন্তু আমাকে সে অনেক ভালবাসে তাইতো বার বার দূঃখের সময় আমার পাশে দ্বাঁড়িয়েছে ফোন করেছে কে ? একমাত্র আমার ভালবাসা, সে ভালবাসাকে আমি এত বড় কথা বলি সে মুখে আমি সামনে দ্বাঁড়াবো ?
৩ ডিসেম্বর ভার্সিটি বন্ধ হবে এদিকে হয়তো আমি খুব মানসিক যন্ত্রনায় আছি । সকালে ওর বাসায় গেলাম ও বাসায় এলো চা করলো ভাত বসালাম । এর পরে অনেকক্ষণ কথা হলো, আমরা আলুভর্তা দিয়ে ভাত খেলাম । এর পরে একটা চিঠি দিয়ে বল্লো রাত ৯টার দিকে পড়তে । আমি ওকে জড়িয়ে ধরে কাঁদলাম হয়তো চট্রগ্রাম চলে যাবে, বাসায় এসে আর ধৈর্য্য রাখতে পারছিলাম না চিঠিটা পড়লাম । ছাদে গিয়ে ফোন দিলাম বন্ধ ছিল যা লেখার তো লিখেছেই আমি প্রতিজ্ঞা করলাম আমি ওর জন্য জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করবো । যাক এরপর প্রয়োজন ছাড়া কারো কাছে ফোন দিতে পারবোনা বল্ল । বল্লাম ঠিক আছে, তখন অনেক কিছুই বুঝিনি শেষে ৩-৪ দিন পর অনেক কথা হলো, সে আমাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে ভুল ধরিয়ে দিলো, এখন আমি বা কি করবো মানুষের মুখে বলে যখন ফেলেছি ফেরাতে তো পারবোনা ।

কি করবো ওর সাথে কথা না বলে থাকতে পারছিনা, বাসায় গিয়ে দেখলাম সিগারেট খায়, খারাপ হয়ে যাবে প্রতিজ্ঞা করেছে, আমার চোখ দিয়ে কয়েকদিনে অজ চোখ  পানি পড়ছে । কোনদিন কারো জন্য এতো চোখের পানি ফেলিনি যা ওর জন্য ফেলেছি, একটা শর্ত দিলাম, ও যদি কাউকে বিয়ে করতে চায় এর জন্য আমার কোন আপত্তি নাই, যে পথ দিয়ে হাটে সে পথ দিয়ে না হাটতে বলে, আমারর মুখ কোনদিন না দেখতে চায় সব কিছুর বিনিময় মাস্টার্স পরীক্ষা দিবে এবং খারাপ হবেনা ও কোন কথা বল্লনা কিছুক্ষণ পরে বল্ল আমি অন্য কাউকে বিয়ে করবো মানতে পারবে সেটা ? । আমি কিভাবে বোজাবো আমি ওকে ভিষণ ভালবাসি, যতকিছু বলিনা কেন ওকে ছাড়া আমি থাকতে পারবোনা । বাঁচতে পারবোনা অন্য কারো কথা চিন্তা করতে পারিনা । ভাবাও সম্ভব না সেটা কিভাবে বোঝাবো ওর জন্য আমার হিদয়টা কুড়ে কুড়ে খায় । কিছু ভাল লাগেনা ১ মিনিটের জন্য ওকে চোখের আড়াল করতে পারিনা ।

পড়তে বসলে পড়তে পারিনা , মাথাটা কেমন জানি করে। সব সময় চোখ দিয়ে পানি পরে, এত পানি কোথা থেকে আসে বুঝিনা, আমি কি করবো, কিভাবে কি করলে ও আমাকে ক্ষমা করবে । আমি নিজেকে কিভাবে শাস্তি দেব । একদিন সকালে উঠে একটা ধারালো ছুড়ি কিনলাম, ছুড়িটা দিয়ে কোথায় কাটবো ভাবলাম, আম্মাতো জানতে চাইবে হাত বা পা কাটলে উত্তর দিতে পারবোনা । তাই দরজার সাথে জোড়ে মাথায় আঘাত করলাম, হঠাৎ একটা ঘুরানি দিলো, রক্ত পড়ছে, সামনে গেলাম, আম্মা বল্লো কি হইছে তোর কপালে ? এমন ভাব করলাম যে কিছুই জানিনা । বল্লাম ইষ্টিলের আলমারির হাতলের সাথে লেগে কেটে গেছে । শেষে এটাই ভাবলাম এই ক্ষত যতদিন আমার মাথায় থাকবে ততদিন মনে করবো ওর অন্তরে দেয়া কস্ট থাকবে । আর যদি সুখিয়ে যায় ক্ষত না থাকে ভাববো কোন দিন আমার দেয়া আঘাত ভুলে যাবেনা । এটাই আমার সবচেয়ে বড় শাস্তি হবে। আমি কিভাবে তোমাকে বোজাবো অন্য কোন ছেলের কথা বল্লে আমার মাথাটা নষ্ট হয়ে যায় ।

তাকে ছাড়া আমি কিছুই ভাবতে পারিনা, মাথাটা ভিষণ ব্যাথা করছে । চোখ দিয়ে জল পরছে অবিরত । তাকেও ভিষণ দেখতে ইচ্ছা করছে কিন্তু —-? যে শাস্তি দেবে নেব মাথা পেতে শুধু ওর সাথে ১ মিনিট কথা বলার অধিকারটুকু যেন না কেড়ে নেয় । আত্নহত্যা করা পাপ, তাই সে আমার অধিকার হারালে আমার ভিতর আমি শেষ হয়ে যাবো, আমি তারে কিভাবে বোজাবো সে ছাড়া আমার জীবন অন্ধকার, কেন এতো কষ্ট তার জন্য আমার আমি কাউকে বুজাতে পারিনা, আমি জানি সে আমাকে অন্তরের যে আসনে বসিয়েছে তার থেকে আমি এখন অনেক দূরে আমি চলে গেছি । সেখান থেকে হয়তো আর ফিরতে পারবোনা । আজ নিজেকে বড় একা নিঃশ্ব মনে হয় । মন নামের সুখ পাখিটা হয়তো আমাকে ছেড়ে অনেক দূরে পালিয়ে গেছে। আমি শূণ্য হাতে কায়া হিসাবে দ্বাঁড়িয়ে আছি, ঁেবচে থাকতে হয়তো বাঁচার জন্য বেঁচে আছি, কেন এমন ভুল করলাম, কি সুখ আমি পেলাম ? । কি করবো ? জীবন কেন এমন হলো ? কেন প্রেম করলাম ? কেন কেন তাকে কস্ট দিলাম । কেন আমি সবার মতো হলাম,  কেন আলাদা থাকতে পারলাম না? এসব প্রশ্নের উত্তর কে দেবে কে কে কে? (জোড়ে কান্না) ।



আমাদের ফেসবুক পাতা




প্রয়োজনে কল করুন 01740665545

আমাদের ফেসবুক দলে যোগ দিন







Translate »